এম রবিউল্লাহ : বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার আদেশের বিরোধিতা
করেছেন। একই সঙ্গে ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারীদের প্রশংসা করেছেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নেওয়া নীতির সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন বলে ওবামার মুখপাত্র কেভিন লিউইস এ কথা জানিয়েছেন। ওবামা মনে করেন ট্রাম্পের অভিবাসী নীতির সিদ্ধান্তের ফলে আমেরিকার মানুষের বিশ্বাসের উপর আঘাত আসবে ও বৈষম্য তৈরি করবে। হোয়াইট হাউজ ত্যাগের পর এটি ওবামার প্রথম পাবলিক ভাষন। ট্রাম্পের এই বিতর্কিত সিদ্ধান্তের ফলে তার দল ডেমোক্রেটিক পার্টির মধ্যে বিভাজন তৈরি হচ্ছে একই সঙ্গে সারা বিশ্ব থেকে অবজ্ঞা আসছে বলেও জানান ওবামা।
হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি শন স্পাইসার ডেইলি প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, প্রেসিডেন্ট যা করছেন তাতে আমেরিকার মানুষের সমর্থন রয়েছে। যারা এটি মানবেন না তারা ওয়াশিংটন ছেড়ে চলে যান। ট্রাম্পের নেওয়া পদক্ষেপের পক্ষেই আছে সবাই রয়েছে। দেশের নিরাপত্তা ও দেশের প্রয়োজনেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রেসিডেন্টে ডোনাল্ড ট্রাস্প।
ডেমোক্রেট আন্দোলনকারীরা সুপ্রিম কোর্টের মাধ্যমে ট্রাম্পের আদেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। ইরাকের শরণার্থীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার জন্য ওবামা প্রশাসনও একই কাজ করেছিল ট্রাম্প প্রশাসনের এমন অভিযোগ করেন। ট্রাম্প প্রশাসনের অভিযোগ, ওবামা প্রশাসনই ২০১১ সালে ‘মুসলিম নিষিদ্ধ’ করার প্রচলন শুরু করেন। ইরাকের শরণার্থীদের ওবামা প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রে না ঢুকতে দেয়নি।
ট্রাম্প প্রশাসনের এই অভিযোগের জবাব দেন ওবামার মুখপাত্র কেভিন লিউইস, বলেন, ট্রাম্প প্রশাসনের এ অভিযোগ আদৌ সত্য নয়। কারণ ওবামা প্রশাসন কেবল নির্দিষ্ট ধর্মীয় বিশ্বাসী যারা বৈষম্য তৈরি করতে চায় তাদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। ঢালাওভাবে কোনো মুসলিমকে বা দেশকে নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। যাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কাজের সম্পৃক্ততা ছিল তাদেরই প্রবেশ আটকানো হয়েছিল।
সাবেক প্রেসিডেন্টরা তাদের উত্তরসূরিদের নিয়ে কোনো ধরনের মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকা যুক্তরাষ্ট্রের একটি ঐতিহ্য। অফিস ছাড়ার পরে রাজনৈতিকভাবে আলোচনা থেকে দূরে থাকতেই সাবেক প্রেসিডেন্টরা সব ধরনের মন্তব্য থেকে বিরত থাকেন। বারাক ওবামাও তার সর্বশেষ সংবাদ সম্মেলনের পরে আর কোনো মন্তব্য করেননি। তবে ওবামা অফিস ত্যাগের মাত্র ১০ দিনের মধ্যেই মুসলিম বিশ্বসহ অন্য দেশের শরণার্থীদের মধ্যে চরম উদ্বেগ বিরাজ করছে। সেই কারণেই ওবামা নিরবতা ও ঐতিহ্য ভেঙ্গে তার উত্তরসূরির পদক্ষেপের বিরোধিতা করলেন।
গত শুক্রবার নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিপজ্জনক বিবেচনায় ইরাক, ইরান, সোমালিয়া, সিরিয়া, সুদান, লিবিয়া ও ইয়েমেন এই ৭ দেশের অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে ৯০ দিনের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। দ্য হিল। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম