উম্মুল ওয়ারা সুইটি ও আনিসুর রহমান তপন: রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশে সফররত কফি আনান কমিশনের সদস্যরা বলেছেন, মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আসা ৮০ শতাংশ নারী মিয়ানমারেই ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। তারা এও বলেছেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতনের অনেকগুলো কারণের মধ্যে ধর্মীয় কারণ একটি, তবে একমাত্র কারণ নয়।
এদিকে আনান কমিশনকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যেকোনো উপায়ই হোক বিগত সময়ে রাখাইন থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে হবে। গতকাল মঙ্গলবার আনান কমিশন পররাষ্ট্রমন্ত্রী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে অনুষ্ঠিত পৃথক বৈঠকে এসব আলোচনা হয়।
গতকাল মঙ্গলবার বিকালে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের নিজ কক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জমান খাঁন কামালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আনান কমিশন।
বৈঠক সম্পর্কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কফি আনান কমিশনের সদস্যরা রোহিঙ্গা বিষয়ে বাংলাদেশের অভিযোগের সঙ্গে একমত প্রকাশ করেন। এ বিষয়ে তাদের কোনো দ্বিমত নেই। কমিশন সদস্যরা অচিরেই এ সমস্যার সমাধান হবে বলে আমাকে আশ্বস্ত করেছেন। মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা আনুমানিক ৫ লাখ হতে পারে।
গতকাল সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং দুপুরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্ট্যাডিজ (বিস) কার্যালয়ে সুশীল সমাজের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
মতবিনিময় শেষে কফি আনান কমিশনের সদস্য ঘাসাম সালাম জানান, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতনের অনেকগুলো কারণের মধ্যে ধর্মীয় কারণ একটি, তবে একমাত্র কারণ নয়। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিলে রাখাইন প্রদেশের সব সমস্যার সমাধান হবে কিনা- প্রশ্নের জবাবে ঘাসাম বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমাদের মধ্যে কথা হয়েছে।
মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের অবস্থা সরেজমিন দেখতে গত ২৮ জানুয়ারি বাংলাদেশে আসেন কফি আনান কমিশনের তিন সদস্য। তারা হলেন- মিয়ানমার নাগরিক উইন ম্রা ও আই লুইন এবং লেবাননের নাগরিক ঘাসাম সালামে। এরপর গত ২৯ ও ৩০ জানুয়ারি তারা কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালি নতুন রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের বর্ণনা শোনেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ছাড়াও সুশীল সমাজের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ, তাসনিম সিদ্দিকী, সিআর আবরার, মেঘনা গুহ ঠাকুরতা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোহাম্মদ শাহ, প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত অলোক কুমার চাকমা, আশফাকুজ্জামান প্রমুখ।