গার্মেন্ট শ্রমিক পরিস্থিতি নিয়ে ক্রেতারা প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়ায় অখুশি মালিকরা
জাফর আহমদ: আশুলিয়ার তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিক পরিস্থিতি নিয়ে ক্রেতারা প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন দেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি ও প্রস্তুতকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। গতকাল মঙ্গলবার দেশের ‘পোশাক শিল্পের উদ্ভুত পরিস্থিতি’ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ক্রেতারা তৈরি পোশাকের অংশিজন। তারা তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি না দিয়ে আমাদের কাছে চিঠি দিলে আমরা খুশি হতাম। এ সময় বিজিএমইএ এর সহ-সভাপতি আ. মান্নান কচিসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ২০২১ সালে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে হলে ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হবে। কিন্তু ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ৩ দশমিক ৮১ শতাংশ দরপতন, ইউরোপিয় ইউনিয়নের বাজার দশমিক ৭৬ শতাংশ এবং ২০১৬ সালের শেষের দুই মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে দরপতন হয়েছে ১ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। এছাড়া ডিসেম্বর মাসে পোশাক রপ্তানির প্রবৃদ্ধি কমেছে ৩ দশমিক ৫৩ শতাংশ, একক বাজার হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি কমেছে ৫৬ দশমিক ১৯ শতাংশ। কানাডা ৭ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ, অষ্ট্রেলিয়ার ১০ দশমিক ৯৬ শতাংশ এবং ব্রাজিলে ৪৫ দশমিক ২৫ শতাংশ। এদিকে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি, শ্রমিকদের ৫ শতাংশ হারে মজুরি বৃদ্ধি এবং পরিবহন খরচ বৃদ্ধির কারণে উৎপাদন খরচ বেড়েছে ১৭ শতাংশ। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা হারাচ্ছে। এ অবস্থায় কাক্সিক্ষত প্রবৃদ্ধি অর্জন ও তৈরি পোশাক শিল্পকে রক্ষার জন্য ঋণের বিপরীতে ৩ শতাংশ সুদ হার কমানোর দাবি জানান বিজিএমইএ সভাপতি।
তৈরি পোশাক রপ্তানিতে কাক্সিক্ষত প্রবৃদ্ধি অর্জনে ঢাকা ও চট্টগ্রামের কাছে দুটি তৈরি পোশাক নগরী প্রতিষ্ঠার দাবি জানান সিদ্দিকুর রহমান। তিনি বলেন, এটা সম্ভব না হলেও অন্তত রুগ্নপ্রায় গার্মেন্ট কারখানাগুলোকে সরকারি খাস জমি বরাদ্দ দেওয়া প্রয়োজন। তা না হলে তৈরি পোশাক শিল্পের উন্নয়ন ব্যাহত হবে।
আশুলিয়ায় কারখানা বন্ধ, শ্রমিক ছাঁটাই, শ্রমিকের বিরুদ্ধে ও ২৭ শ্রমিক জেলে থাকা সম্পর্কে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে তাদের কোনো করণীয় নেই। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও তৈরি পোশাক শিল্পে পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে যা করণীয় তা করেছে সরকার। পাশাপাশি ২৬২৬ জন শ্রমিক ছাঁটাই হয়েছে-এ তথ্যও ঠিক নয় বলে শ্রমিক ও আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংস্থার অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেছেন। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম