জাফর আহমদ: পাকিস্তানি শাসকদের দ্বারা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্যের শিকার হতো এ অঞ্চলের মানুষ। সেই বৈষম্য দূরের আকাক্সক্ষা এখনো বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এমন হতাশার কথা শুনালেন বিশিষ্টজনরা। গতকাল বিআইআইএসএস মিলনায়তনে সিজিএস আয়োজিত সেমিনারে বক্তারা বলেন, উন্নয়ন হচ্ছে। তবে তা বৈষম্যের। দেশের অর্থনীতি কয়েকজনের অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে। কিন্তু স্বাতীনতা পূর্ব এ অঞ্চলের মানুষ মানবিক ও অর্থনৈতিক সাম্যের সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেছিল সে সাম্যের বদলে দেশ পরিণত হয়েছে গুটিকয়েক মানুষের দেশে। এর বিরুদ্ধে মানুষ আওয়াজ তুললেও তা কম। এবং যে আওয়াজ উঠছে তা জোরালো হচ্ছে না। সিজিএস-এর নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমানের সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনিয়স বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. আলী রিয়াজ। সেমিনারে মূল আলোচক ছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান। বক্তব্য রাখেন ড. জিল্লুর রজমান খান, মিজানুর রহমান শেলি, ড. তোফায়েল আহমেদ, এ্যাম্পসেডর নাসিম ফেরদৌস, সাংবাদিক নুরুল কবির, ব্যারিস্টার তানিয়া আমির, লে. জে. (অব.) মইনুল ইসলাম প্রমুখ অধ্যাপক, আইনজীবী, কূটনীতিক ও গবেষক।
হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, দেশে উন্নয়ন হচ্ছে তা স্বনিয়োজিত উন্নয়ন। সমন্বিত ও অংশগ্রহণ যে উন্নয়নের প্রয়োজন তা এখন নেই। বড় বড় প্রকল্প হচ্ছে তার অযৌক্তিক ব্যয় হচ্ছে কিনা- তা দেখার কেউ নেই। এটা একটি সমস্যা। সমস্যা যখন তৈরি হচ্ছে তখন তা দেখার কেউ নেই। কিন্তু যখন ‘সমস্যা’ থেকে তৈরি নেতিবাচক
ফল সমাজে পড়া শুরু করে তখন মানুষ হৈ চৈ করে।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে যাদের দূর করে বাংলাদেশ এসেছিল স্বাধীন বাংলাদেশে তারা না থাকলেও তাদের তৈরি করা অবকাঠামো রয়ে গেছে। এখন রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার পরিবেশ সংকুচিত হয়ে এসেছে। সাধারণ মানুষ আর নির্বাচন কেন্দ্রিক রাজনৈতিক কর্মকা-ে অংশগ্রহণ করতে চায় না। তারা মনে করে তারা যে রায় দিচ্ছে তা নির্বাচনে প্রতিফলন হয় না। এটা রাজনীতিকদের যেমন দোষ তেমনি সুশিল সমাজের মানুষের কর্মকা-ে প্রতিফলিত হয় না। এ জন্য রাজনীতিকরা সুবিধা নিচ্ছে। আর এভাবে শাসন ব্যবস্থা থেকেই মানুষ ক্রমে দূরে সরে যাচ্ছে। স্থানীয় নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, সমাজের একেবারে তৃণমূল থেকে রাজনৈতিক অস্বচ্ছতার শুরু হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা পর্যায়ে থেকে শুরু করে একেবারে সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত সর্বনিম্ন জনঅংশগ্রহণের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি তৈরি হয়েছে। এ কারণে প্রশাসন যন্ত্র বা সরকার যন্ত্র নিয়ে সম্পর্কে মানুষ বৈধতার প্রশ্ন তুলেছে। ব্যারিস্টার তানিয়া আমির বলেন, সরকারের বৈধতা নিয়ে যেমন প্রশ্ন আছে। তেমনি এ বৈধতার পরিমাপেও প্রশ্ন আছে। এমনকি নির্বাচন ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো বিন্যাসের ক্ষেত্রেও বৈধ্যতার প্রশ্ন আছে। সম্পাদনা: এনামুল হক