উম্মুল ওয়ারা সুইটি: পড়াশোনার পাশাপাশি ছেলেমেয়েদের সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চায় উদ্বুদ্ধ করতে অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বিপথে যাওয়া ছেলেমেয়েরা সাহিত্য ও সংস্কৃতির চর্চার মধ্য দিয়ে সুপথে ফিরে আসবে। তাই সবার বেশি বেশি করে বই পড়ার অভ্যাস করতে হবে। নিজেরাও বই পড়–ন এবং ছেলেমেয়েদের বই পড়তে দিন।
গতকাল বুধবার বাঙালির প্রতীক্ষার ও প্রাণের মেলা ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এই আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আমাদের জন্য গর্বের বিষয় হলো বাংলাদেশের সবকিছুই রক্ত দিয়ে অর্জন করেছে। তিনি বলেন, আমাদের গর্বের বিষয় হলো আমরা লড়াই করে ভাষা পেয়েছি। তাই বই প্রকাশকদের অনুরোধ করছি, বাংলা ভাষাকে বিশ্ব দরবারে ছড়িয়ে দিন।
প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের বেশি বেশি বই পড়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, পরিবারে বই পড়ার চর্চা রাখুন। ছোট থেকেই এই অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। দেখবেন সন্তানরা বিপথে যাবে না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন ডিজিটাল বইয়ের লাইব্রেরি হাতের মধ্যে। কিন্তু আমি বই হাতে নিয়ে পাতা উল্টাতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করি। প্রধানমন্ত্রী দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার কারণে এখন এই মেলায় আসতে পারি না। বন্দিখানায় পড়ে থাকি। বই পড়লে অনেক কিছু ভুলে থাকা যায়, জ্ঞান অর্জন করা যায়। সকলে বই পড়ুন। উদ্বোধনের পর মেলার বেশ কয়েকটি স্টল ঘুরে দেখেন প্রধানমন্ত্রী। প্রতিবারের মতো এবারও মেলায় বইয়ের স্টল ঘুরে বেশকিছু বই কেনেন তিনি। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী ৪ দিনব্যাপী ‘আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন ২০১৭’ উদ্বোধন করেন এবং ‘বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০১৬’ বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রচিত ‘নির্বাচিত প্রবন্ধ’ বই মেলায় প্রকাশিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর হাতে বাংলা একাডেমি প্রকাশিত মীর মশাররফ হোসেনের অমর সৃষ্টি ‘বিষাদ সিন্ধু’র অনুবাদ ‘ওসেন অব সরো’ এবং ‘হানড্রেড পোয়েমস ফ্রম বাংলাদেশ’ বই দুটি তুলে দেওয়া হয়। সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
বিদেশি অতিথি হিসেবে চীনের প্রখ্যাত গবেষক ও রবীন্দ্র অনুবাদক ডং ইউ চেন, অস্ট্রিয়ার মেনফ্রেড কোবো, পুয়ের্তোরিকোর মিঁজ লুস মারিয়া লোপেজ ও ভারতের চিন্ময় গুহ উপস্থিত ছিলেন। সম্পাদনা: শাহানুজ্জামান টিটু