সাহানাই কি বিশ্বের প্রথম বৃক্ষমানবী?
ডেস্ক রিপোর্ট : বৃক্ষমানব আবুল বাজানদারের পর এবার ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে একই ধরনের রোগে আক্রান্ত্র একটি ১০ বছরের কন্যাশিশু। নেত্রকোনার তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী সাহানা খাতুনের মুখেও শেকড়ের মতো দেখতে একই ধরনের উপসর্গ রয়েছে। তার থুতনি, নাক, দুই কানের লতিতে এরকম শিকড় রয়েছে। বিবিসি
চিকিৎসকরা বলছেন, এ ধরনের রোগে এর আগে কোনো মেয়ে বা নারীর আক্রান্ত হওয়ার তথ্য তাদের জানা নেই। ইন্টারনেটেও কয়েকজন পুরুষ রোগীর বিষয়ে তথ্য পাওয়া গেলেও, কোনো নারীর বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়নি।
গত রোববার তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। তার পাশের বিছানাতেই রয়েছে অনেকটা একই ধরনের রোগে আক্রান্ত শিশু রিপন দাস।
বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক সামন্ত লাল সেন জানান, আবুল বাজানদার অনেক পরিণত অবস্থায় আমাদের কাছে ভর্তি হয়েছিলেন। শাহানার রোগের লক্ষণগুলোও অনেকটা একই ধরণের। তবে সে অনেক আর্লি স্টেজে বা শুরুর দিকে আমাদের কাছে এসেছে।
তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে রোগটি এপিডার্মোডিসপ্লাসিয়া ভেরাসিফরমিস বা এ ধরনের কোনো রোগে আক্রান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। শাহানার রোগটির বিষয়ে এখন পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে। কীভাবে তার চিকিৎসা চলছে, সামনের সপ্তাহে তা সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে এই পর্যায়ে অস্ত্রোপচার করে ভালো করা সম্ভব হবে বলে মনে হচ্ছে।
এর আগে এ ধরনের রোগে কোনো মেয়ে বা নারীর আক্রান্ত হওয়ার খবর শোনা যায়নি বলেও তিনি জানান।
শাহানার বাবা শাহজাহান দিনমজুর হিসেবে অন্যের ক্ষেতখামারে কাজ করেন। শাহানার ছোটবেলাতেই তার মা মারা যায়। এখন তিনি সরকারি খাসজমিতে মেয়েকে আর মাকে নিয়ে বসবাস করেন।
শাহজাহান মিয়া জানান, সাত/আট বছর আগে থেকে মেয়ের শরীরে ঘামাচির মতো গোটা উঠতে থাকে। প্রথমদিকে তারা ততটা গুরুত্ব দেননি। পরে স্থানীয় হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা করান। কিন্তু তাতে ভালো হয়নি। পরে আস্তে আস্তে মুখের দাগ বড় হতে থাকে। সারা শরীরেও এরকম রয়েছে।
ডা. সামন্ত লাল জানান, দরিদ্র এই পরিবারটি চিকিৎসার ব্যয় বহন করার ক্ষমতা নেই। বার্ন ইউনিটের পক্ষ থেকেই তার ব্যয় বহন করা হচ্ছে।
ডা. সেন বলছেন, বাংলাদেশে এ নিয়ে এ ধরনের রোগে আক্রান্ত্র ৫ জনকে সনাক্ত করা হলো। ফলে এই রোগটির প্রকোপ এবং প্রবণতার বিষয়ে তারা এখন একটি গবেষণার কথা ভাবছেন।
এই হাসপাতালেই চিকিৎসা হয়েছিল বৃক্ষমানব হিসাবে পরিচিত আবুল বাজানদারের। তার হাতে ও পায়ে গাছের শিকড়ের মতো গোটা হয়েছিল, যা পরে অস্ত্রোপচার করে ফেলে দেওয়া হয়। সম্পাদনা: হামিদুর রহমান