সকল প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে দ্রুত বৃত্তাকার নৌপথ চালু হবে : বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান
তরিকুল ইসলাম সুমন: রাজধানীর চারপাশের ১৩ ব্রিজ অপসারণ বা উঁচু না করায় ৬ বছরেও চালু করা সম্ভব হয়নি এ নৌপথ। এ নৌপথের সকল প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে পুরো নৌপথ চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমডোর এম মোজাম্মেল হক।
বিআইডব্লিউটিএ-র চেয়ারম্যান বলেন, ঢাকার চারপাশের বৃত্তাকার নৌপথ চালু করার জন্য আমরা কাজ করছি। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে এ পথের প্রতিবন্ধক ব্রিজের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি ব্রিজ অপসারণ করা হয়েছে। বাকিগুলোও দ্রুত সময়ের মধ্যে অপসারণ করা হবে। এসব ব্রিজ অপসারণের জন্য তিনি ব্যক্তিগতভাবেও বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।
বিআইডব্লিউটিএ-র অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ড্রেজিং) ও এক সময়কার বৃত্তাকার নৌপথ বাস্তবায়ন প্রকল্পের (প্রকল্প-১) পরিচালক রকিবুল ইসলাম তালুকদার জানান, ২০০৫ সালে শুরু হওয়া বৃত্তাকার নৌপথ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল। বৃত্তাকার নৌপথ বাস্তবায়নের অন্তরায় হিসেবে রয়েছে বিভিন্ন নদীর উপরে থাকা ১৩টি নিচু ব্রিজ। এসব ব্রিজ অপসারণে বিআইডব্লিউটিএ-র পক্ষ থেকে এলজিইডিকে, রোডস অ্যান্ড হাইওয়েকে এবং বাংলাদেশ রেলওয়েকে অনেক চিঠি দিয়েছে।
তিনি আরও জানান, এ নৌপথকে কার্যকর করার জন্য ঢাকা সদরঘাট থেকে কাঁচপুর ব্রিজ পর্যন্ত ১৪টি ল্যান্ডিং স্টেশন বসানো হয়েছে। ঢাকা সদরঘাট থেকে আশুলিয়া-৩০ কিলোমিটার এবং আশুলিয়া থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত ৪০ কিলোমিটার নৌপথে ড্রেজিং করা হয়েছিল। বাকি ৪০ কিলোমিটার পথের নাব্যতা রয়েছে। পণ্য পরিবহনে ১৪টি ল্যান্ডিং স্টেশন সচল থাকলেও যাত্রী পরিবহন কমে গেছে।
বিআইডব্লিউটিএ-র চেয়ারম্যান কমোডর এম মোজাম্মেল হক আরও বলেন, রাজধানীর চারপাশে বৃত্তাকার নৌপথে যাত্রী চলাচল উপযোগী করতে হলে নদীর দূষণ দূর করতে হবে। দূষণমূক্ত না হলে এ পথে যাত্রী চলাচল স্বাভাবিক হবে না। এ নৌরুট সচল রাখতে ড্রেজিং ও ল্যান্ডিং স্টেশনগুলো সংস্কার করতে হবে। পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি ব্রিজ রয়েছে যা এলজিইডি, সড়ক ও সেতু বিভাগ এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের। এগুলো আপসারণের জন্য তারাও কাজ করছেন। লো-হাইডের ব্রিজগুলোকে ওয়ার লোভেল থেকে ৭ দশমিক ৬২ মিটার উঁচু করার জন্যও তারা কাজ করছেন।
বিআইডব্লিউটিএ-র চেয়ারম্যান জানান, ঢাকার চারপাশের বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু, শীতলক্ষ্যা এই চার নদীর তীরে ৯০৭৪টি সীমানা পিলার স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩০৯২টি পিলার সঠিক জায়গায় না বসানোর কারণে বর্তমানে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ এবং গাজীপুরের জেলা প্রশাসকরা সীমানা পিলার সঠিক জায়গায় বসানের জন্য কাজ করছেন। এছাড়াও এসব জায়গার নদীর তীরে ৫০ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে করার জন্যও কাজ করছেন জেলা প্রশাসকরা। ভবিষ্যতে ঢাকার এসর নদীর ২২০ কিলোমিটার তীর দখলমুক্ত করে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে।
উল্লেখ্য, বৃত্তাকার নৌপথের ১৩ ব্রিজের বিষয়ে করণীয় ঠিক করার জন্য ৪ মন্ত্রণালয়ের সচিবকে (নৌ, ভূমি, রেল, সড়ক) দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০১০ সালের ৫ আগস্ট নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ে নদীর নাব্যতা সংরক্ষণ বিষয়ক এক টাস্কফোর্সের সভায় নৌপরিবহন মন্ত্রী ও টাক্সফোর্স সভাপতি শাজাহান খান এ নির্দেশ দিয়েছিলেন। সম্পাদনা: শাহানুজ্জামান টিটু