নাটকীয়ভাবে সেনা তলবের প্রয়োজন নেই, জাপানকে মেত্তিস
ইমরুল শাহেদ: মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস মেত্তিস গতকাল টোকিওর প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সফর করার সময় জাপানকে নিশ্চিত করেছে যে যুক্তরাষ্ট্র তাদের পাশেই থাকবে। তিনি বলেছেন প্রয়োজন হলে দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের মোকাবিলায় বিপুলসংখ্যক মার্কিন সেনা আসবে এবং আঞ্চলিক দেশগুলোর সঙ্গে বিশ্বাস ভঙ্গের অভিযোগ তুলে তিনি বেইজিংয়ের সমালোচনাও করেন। টোকিওর এক সংবাদ সম্মেলনে মেত্তিস বলেছেন, ‘আমরা এখনই নাটকীয়ভাবে সেনা তলবের কোনো প্রয়োজন দেখছি না। সকলকে কূটনীতির আশ্রয় নিতে হবে।’ টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন সিনেট শুনানিতে বলেছেন, বিতর্কিত দক্ষিণ চীন সাগরে চীন যে কৃত্রিম দ্বীপ নির্মাণ করেছে সেখানে চীনকে যেতে দেওয়া হবে না। আন্তর্জাতিক জলসীমা সংরক্ষণের ব্যাপারে হোয়াইট হাউস তাদের দৃঢ় মনোভাব ব্যক্ত করেছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র কাজটা কিভাবে করবে তা একেবারেই পরিষ্কার নয়। তারা সেখানে সেনা ব্যবহার করবেন কিনা সেটাও স্পষ্টভাবে বলেননি। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, হোয়াইট হাউস এক্ষেত্রে সেনা বাহিনীকে ব্যবহার করতেও পারে। অথবা নৌবাহিনীকে দিয়ে বাধার সৃষ্টি করতে পারে। এতে চীনের সঙ্গে যুদ্ধ বেঁধে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং সে যুদ্ধে পরমাণু অস্ত্রও ব্যবহার হতে পারে। এখানে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বড় ধরনের একটা অর্থনৈতিক স্বার্থও রয়েছে। ট্রাম্প আগেই থেকেই অভিযোগ করে আসছেন যে চীনের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে বেকারের সংখ্যা বাড়ছে। তবে মেত্তিস বলেছেন, এই মুহূর্তে সেনা তলবের কোনো কারণ দেখছেন না তিনি। মেত্তিস বলেন, ‘কূটনৈতিক উদ্যোগসহ আমাদেরকে সব রকম চেষ্টা করতে হবে। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আমাদেরকে যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।’
টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দক্ষিণ চীন সাগরের বেশির ভাগই দাবি করছে চীন। এই সাগরের দাবিদার তাইওয়ান, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন এবং ব্রুনাইও। এই সাগরে প্রচুর মাছ পাওয়া যায়। তেল-গ্যাসের একটা বড় ধরনের মওজুদ তো আছেই।
পক্ষান্তরে পার্সটুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পূর্ব চীন সাগরের বিতর্কিত দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে ‘ভুল মন্তব্য করা’ থেকে বিরত থাকতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে চীন। বেইজিং বলেছে, মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী এসব দ্বীপ নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়বে। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লু ক্যাং শনিবার এ ধরনের বক্তব্য দেওয়া বন্ধ করতে ওয়াশিংটনের প্রতি আহ্বান জানান। বিতর্কিত ওই দ্বীপপুঞ্জের ওপর চীনের সার্বভৌম অধিকারের বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
চীন বিতর্কিত ওই দ্বীপপুঞ্জকে দিয়াইয়্যু বলে উল্লেখ করলেও জাপানিরা এগুলোকে সেনকাকু বলে অভিহিত করে। লু ক্যাং আরও বলেন, এই ইস্যুকে জটিল করা এবং আঞ্চলিক পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করা থেকে ওয়াশিংটনকে বিরত থাকতে হবে। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম