বিশ্বজিৎ দত্ত: বিদায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দিন গতকাল সাংবাদিকদের বলেছেন, আমরা অন্তর থেকে দ্বায়িত্বপালন করেছি। নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্ট সাবেক ও বিশিষ্টজনরা মনে করেন নতুন নির্বাচন কমিশনকে এই অন্তর থেকে দ্বায়িত্বপালনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না। তাদের মতে, নতুন কমিশনের প্রধান কাজ হবে আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের ভাবমূর্তি উদ্ধার করা। সকল দলের অংশগ্রহণে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা। এটি করতে গেলে তাদের স্বকীয়তাও আগে থেকেই কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রমাণ করতে হবে।
এ বিষয়ে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার (অব.) সাখাওয়াত হোসেন বলেন, নতুন নির্বাচন কমিশনকে সামনের দিনে ৩টি চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। প্রথমত হলোÑ নির্বাচন কমিশনের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার। এটি করতে চাইলে অবশ্যই তাদের কার্যক্রমের মাধ্যমে জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে। তৃতীয়ত হলোÑ নির্বাচন কমিশনের স্টাফদের আস্থা অর্জন। কারণ তারাই আসলে মাঠ পর্যায়ে কাজ করেন। নতুন নির্বাচন কমিশন প্রাথমিকভাবে এই কাজগুলো করতে পারলে আগামীতে তাদের পথচলা অনেক সহজ হবে। আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচন অনেক দূরে রয়েছে। তারা এই কাজগুলো করার জন্য সময়ও পাবেন। বর্তমানে যারা নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন তাদের মূল্যায়নের এখনো সময় হয়নি। তবে প্রাথমিকভাবে তাদের ভালো বলেই মনে হচ্ছে।
অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, নতুন নির্বাচন কমিশনের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হবে একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সবদলের অংশগ্রহণ করার বিষয়টি। তারা এই বিষয়ে একটি দড়ির উপর দিয়ে হাঁটছেন। যদিও আইন করা হয়েছে দুইবার কোনো রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে তাদের নিবন্ধন বাদ যাবে। এই আইনের কথা কিন্তু বিদ্রোহ করে বসে তাহলে আসলে কিছু করার থাকে না। এই ভয়টা তাদের সবসময় তাড়া করবে। নতুন নির্বাচন কমিশনকে দ্বায়িত্বশীল ও সংবেদনশীল হতে হবে। তাদের সময়মতো কথা বলাটাও একটি জরুরি বিষয়। অসময়ে কথা বলে সময়ের কাজ করা যায় না। এইক্ষেত্রে তাদের ভামূর্তিকেও বাড়াতে হবে।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার মোদাব্বির হোসেন চৌধুরী বলেন, নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার তার দলকে আমার কাছে ভালোই বলে মনে হয়েছে। তাদের সামনে চ্যালেঞ্জ হবে তারা দলবদ্ধ হয়ে কাজ করতে পারছে কিনা। তারা সাংবিধানিকভাবে স্বাধীন। তাদের নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হবে আইন অনুযায়ী স্বচ্ছ নির্বাচন করাই হবে তাদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ।
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নতুন নির্বাচন কমিশনের সামনে তো একটাই চ্যালেঞ্জ একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন করা। বর্তমান ভেঙে পড়া নির্বাচন কমিশনকে জোড়া লাগানো। তাদের সাহসিকতার সঙ্গে কাজ করা। এই কাজগুলো করতে পারলে আগামী দিনে আমরা একটি ভালো নির্বাচন দেখতে পারব। এখানে অন্তর থেকে চাইলেই ভালো নির্বাচন কমিশন হয় না। তার জন্য সাহসিকতারও প্রয়োজন রয়েছে। তিনি বলেন, তাদের আগামী দিনের কাজ তাদের মূল্যায়ন করবে। তারা যদি সহযোগিতা চায় তবে এ বিষয়ে তাদের সহযোগিতাও করা যাবে। সম্পাদনা: শাহানুজ্জামান টিটু