মুফতি জাহিদুজ্জামান
পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ গ্রন্থ আল কুরআন। স্রষ্টার মহাদান। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শ্রেষ্ঠ মুজিজা, বান্দার জন্য রহমতের ভা-ার। সর্বোপরি বিশ্ব মানবতার মুক্তির মহাসনদ। এই পবিত্রগ্রন্থ নাজিলের (অবতরণ) কয়েকটি উদ্দেশ্য তুলে ধরা হলোÑ
১. সঠিক পথের নির্দেশনা : কুরআন বিশ্ববাসীর জন্য হেদায়াত, রহমত ও সুসংবাদের ঘোষণা এবং দিশেহারা মানুষকে সঠিক পথের সন্ধান দানের নিমিত্তে আল্লাহ তায়ালা আল কুরআন নাজিল করেন।
২. সমস্যার সমাধন : বিশ্বমানবতা যখন চরম সমস্যায় জর্জরিত হয়ে অন্ধকারে নিমজ্জিত, যখন বিশ্ব মানবতা আশা করছিল কোনো এক সিদ্ধান্তের, ঠিক তখনিই আল্লাহ তাআলা সব সমস্যার সমাধানকল্পে আলোকবর্তিকা রূপে কুরআনুল কারিম অবতীর্ণ করেন।
৩. সতর্ক বার্তা প্রদান : কুরআন আল্লাহ প্রদত্ত সব নেয়ামতের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়ার পাশাপাশি অতীতের হটকারী জাতিগুলোর ভুলের শোচণীয় পরিণামসমূহ উল্লেখের মাধ্যমের মানবসমাজকে সতর্কতা প্রদানের নিমিত্তে আল-কুরআন অবতীর্ণ হয়।
৪. ভ্রান্ত বিশ্বাসের অপনোধন : ইসলামপূর্ব আরব সমাজের লোকেরা বিভিন্ন ভ্রান্ত আকিদা পোষণ করত। নিজেদের মনমত বিধান তৈরি করে জীবন অতিবাহিত করত। তারা ছিল চরম কুসংস্কারে আচ্ছন্ন। তাদের সে ভ্রান্ত ধ্যান-ধারণা খ-নের নিমিত্তে কুরআন অবতীর্ণ হয়।
৫. ইসলামি সমাজের রুপরেখা প্রণয়ন : মানব রচিত সব মতাদর্শ উৎখাত করে ইসলামি সমাজের বাস্তব রুপরেখা প্রণয়ন তথা কুরআনের বিধান কায়েম করা। বস্তুত এটাই ছিল কুরআন নাজিলের মূল উদ্দেশ্য।
৬. শিরক মুক্ত সমাজ গঠন : আল-কুরআন নাজিলের পূর্বে মানবতা ছিল জাহেলিয়াতের ঘোর অন্ধকারে আচ্ছন্ন। শিরক, কুফর আর নিফাকিতে সয়লাব ছিল মানবসমাজ। কুরআন এসেই বিশ্ববাসীকে এ সব মুনকার কাজ থেকে মুক্ত করে ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তির পথ-নির্দেশ প্রদান করে।
৭. ইনসাফ প্রতিষ্ঠা : অন্যায়, জুলম-অত্যাচার, মানবাধিকার লংঘণে বিশ্বমানবতা অস্থির। আর এ জন্য দরকার ন্যায় ও ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠিত হওয়া। কুরআন নাজিলের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হলো ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা।
৮. রবের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন : প্রতিটি মুমিনেরই একান্ত কামনা থাকে তার মালিকের সঙ্গে সাক্ষাত লাভ। কুরআন এ কামনা পূরণে পথনির্দেশ হিসেবে অবতীর্ণ হয়েছে।
৯. সত্যায়নকারী : সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ আসমানি কিতাব হলো আল-কুরআন। এর আগে অনেক আসমানি কিতাব ও অগণিত নবী-রাসুল পৃথিবীতে আগমণ করেছেন। কুরআন এসে পূর্ববর্তী নবী-রাসুলসহ আল্লাহ প্রদত্ত আসমানি কিতাবের সত্যতা প্রমাণ করেছে।
১০. তাজকিয়ায়ে নফস : সর্বোপরি দুনিয়ার সব কর্মমা-ে বান্দার আত্মপরিশুদ্ধি লাভে কুরআন এক কার্যকারী গ্রন্থ হিসেবে অবতীর্ণ হয়।