দরিদ্র ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ান
সাক্ষাৎকার : মাওলানা মুহাম্মদ মুতীউর রহমান
‘আন-নাদিল ইমদাদী আল ইসলামী’ জনবেসামূলক কাজ করে থাকে। এই সেবা সংস্থা দরিদ্র ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ায়। কোনো দল, গোষ্ঠী বা ব্যক্তিকে সন্তুষ্ট করার জন্য আমরা কাজ করি না। আমরা শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য কাজ করি। আমরা অল্প অল্প করে কাজ করি, কিন্তু যেভাবে কাজ করলে মানুষের বেশি উপকার হবেÑ সেইভাবে কাজ করার চেষ্টা করি। রাজধানীর মুহাম্মদপুরে নিজের অফিসে বসে আমাদের অর্থনীতিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন, আন-নাদিল ইমদাদী আল ইসলামীর তত্ত্বাবধায়ক মাওলানা মুহাম্মদ মুতীউর রহমান।
তিনি বলেন, সৃষ্টির সেবা করা আল্লাহপাক খুব পছন্দ করেন। হাদিসে ও কুরআনে সৃষ্টির সেবার প্রতি অনেক গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। একটি হাদিসে আছে, একদিন এক সাহাবি রা. একটি পাখির বাসা থেকে পাখির ছানা পেড়েছিলেন এবং ছানাটি নিয়ে নবী করীম সা. এর দরবারে হাজির হয়েছিলেন। আর মা-পাখিটিও সাহাবির সাথে সাথে এসেছিলো এবং ডাকছিলো। তখন নবীজি বুঝতে পেরেছিলেন এবং ছানা-পাখিটিকে নীড়ে রেখে আসতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। অন্য একটি হাদিসে তো এমনও আছে যে, একজন গুনাহগার নারী একটি কুকুরকে পানি পান করানোর কারণে আল্লাহ তাকে মাফ করে দিয়েছিলেন আর একজন নেককার নারী শুধু একটি বিড়ালকে বিনা কারণে কষ্ট দেওয়ায় তার জন্য আল্লাহপাক জাহান্নাম ওয়াজিব করে দিয়েছিলেন। তো আল্লাহর সৃষ্টির জন্য কিছু করার লক্ষ্যেই আন-নাদিল ইমদাদী আল ইসলামীর সাথে জড়িত আছি।
মাওলানা মুতীউর রহমান বলেন, আন নাদিল ইমদাদী আল ইসলামী প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৮ সালে। কিন্তু আমরা সরকারি রেজিস্ট্রিভুক্ত হই ২০০৪ সালে। আমরা মূলত দরিদ্র ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য কাজ করতে চাই। তাই আমরা আমাদের কাজ শুরু করার আগে এমন কিছু লক্ষ্য নির্ধারণ করি যাতে সেই বিষয়গুলোর মাধ্যমে মানুষের অনেক বেশি উপকার করা যায়। এখনো সেই বিষয়গুলো নিয়েই আমরা কাজ করছি। আমাদের নির্ধারিত বিষয়গুলো হচ্ছে ১, বিলামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও ঔষধ প্রধান করা ২. ভিক্ষাবৃত্তি বিমোচনে মাটির ব্যাংক প্রকল্প ৩. এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস ৪. হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্প ৫. বন্যা কবলিত অঞ্চলে ত্রাণ বিতরণ ৬. শীতার্তদের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরণ ৭. ঘূর্ণিঝড় কবলিতদের সহায়তা দেয়া ৮. নগদ অনুদান প্রদান করা ৯. গভীর নলকূপ স্থাপন ১০. দরিদ্র পর্দানশীল মহিলাদের বোরকা প্রদান ১১. দ্বীনি ও সাধারণ শিক্ষার সমন্বয়ে মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করা ১২. দরিদ্র রোজাদারদের মাঝে ইফতার বিতরণ করা ১৩. কোরবানির সময় গোশত বিতরণ করা।
এছাড়াও আমরা প্রায় ১০ বছর থেকে বিশ্ব ইজতেমায় ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প করে আসছি। এবার আমরা ২৩৬৫ জন রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও ঔষধ প্রদান করেছি। তাছাড়া প্রতি মাসে একটি করে মেডিক্যাল ক্যাম্প করে থাকি। সেখানে বেশ কিছু মানুষকে চিকিৎসা সেবা ও ঔষধ দিয়ে থাকি। এবার শীত মৌসুমে আমরা প্রায় ৩০০ জনকে শীতবস্ত্র প্রদান করেছি। আমাদের আরো একটি বিশেষ খেদমত হলো, আমরা ২০০৬ সালে বরগুনার বাউলকর এলাকাতে একটি মসজিদ নির্মাণ করেছি।
তিনি বলেন, আমরা আমাদের এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে মূলত আল্লাহকে সন্তুষ্ট করতে চাই। যাদের সুযোগ হয় অসহায়-গরীবদের সহায়তা করারÑ আপনারও তাদের পাশে দাঁড়ান। আল্লাহ সকলকে মানুষের সেবা করার তৌফিক দান করেন। আমিন।
সাক্ষাৎকার গ্রহণ : ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ