দিনাজপুর প্রতিনিধি : দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলা তথা শহর দিয়ে বয়ে যাওয়া এক সময়ের খরস্রোতা শাখা যমুনা নদী দীর্ঘ দিন সংস্কার না হওয়ায় এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। বছরের অধিকাংশ সময় নদীতে পানি পাওয়া যায় না। শুকনো নদীর দুই ধার ক্রমেই দখল হয়ে যাচ্ছে। একই সাথে নদীর বুক চিরে চাষ হচ্ছে রবি শষ্য।
এদিকে, নদীতে পানি না থাকায় বেকার হয়ে পড়েছেন নদী পাড়ের কয়েক হাজার জেলে পরিবার। তারা এখন বাপ-দাদার পেশা ছেড়ে অন্য কাজ করছেন। এতে করে এ অঞ্চলে দেশি মাছের অভাব দেখা দিয়েছে প্রকট। অন্যদিকে কৃষি কাজে ভূগর্ভের পানি ব্যবহার হওয়ার কারণে পরিবেশ বিপর্যয়েরও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, এই নদীটি রংপুর জেলার তিস্তা নদী থেকে রংপুর জেলার কয়েকটি থানা পেরিয়ে দিনাজপুর জেলার খানসামা, চিরিরবন্দর, পার্বতীপুর, ফুলবাড়ী উপজেলার পৌরসভাসহ তিনটি ইউনিয়ন অতিক্রম করে পার্শ্ববর্তী বিরামপুর, হাকিমপুর উপজেলার ভিতর দিয়ে ভারতের পশ্চিমবাংলার দক্ষিণ দিনাজপুরের কিছু দূর প্রবাহিত হয়ে আবারও বাংলাদেশের জয়পুরহাট জেলার পাচবিবি, জয়পুরহাট সদর, বদলগাছী, নওগাঁ জেলার ধামুরাই, পতœীতলা, সাপাহার হয়ে যমুনা নদীতে মিলিত হয়েছে। এই নদীর পানি দিয়েই চলত নদী পাড়ের কৃষকের চাষাবাদ। কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে নদীটি খনন বা সংস্কার না হওয়ায় পলি ধোয়া নেমে ভরাট হয়ে উঠেছে। বর্ষাকালে নদীতে পানির দেখা মিললেও বর্ষা শেষ হবার সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে যায় নদীর পানি। যার ফলে নদী এলাকার কৃষিকাজ এখন সেচ পাম্পের উপর নিভরশীল হয়ে পড়েছে। এতে করে দিন দিন ভূ-গর্ভের পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। ভূ-গর্ভের পানি অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন পরিবেশবিদেরা। তারা পরিবেশ রক্ষার্থে নদীটি ড্রেজিং করে রাবার ড্যাম নির্মাণ এবং বর্ষাকালের পানি নদীতে ধরে রেখে কৃষি কাজে ব্যবহার করার পরামর্শ দেন। এলাকাবাসীরা বলেন, নদীটি খনন করে রাবারড্যাম নির্মাণের মাধ্যমে বর্ষাকালের পানি ধরে রাখা হলে শুধু কৃষি কাজেই উপকার হবে না,একটি বিশাল জনগোষ্ঠীর মাছের চাহিদাও পূর্ণ হবে। সম্পাদনা: শাহীন আলম