উম্মুল ওয়ারা সুইটি: মিয়ানমারের রাখাইন থেকে কক্সবাজারের টেকনাফে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো তামাশা করছে।
বিশ্লেষকরা বলেন, বিশ্ব মোড়লরা গত ৫ মাসেও রাখাইনে নারী ধর্ষণ, শিশু হত্যা, লুণ্ঠন বিষয়ে মিয়ানমারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারেনি। অথচ বাংলাদেশ যখন বলছে, বিশাল এই জনগোষ্ঠীকে তারা একটি নির্দিষ্ট জায়গায় পুনর্বাসন করবে তখন মানবাধিকার সংস্থাগুলো নতুন করে বাংলাদেশকে মানবাধিকার আইন শেখানোর চেষ্টা করছে। তারা নোয়াখালীর ঠেঙ্গারচরে রোহিঙ্গাদের সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্তে সরকারকে অনড় থাকার আহ্বান জানান। পাশাপাশি বিষয়টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচঅআরডব্লিউ)-এর বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেন তারা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, রোহিঙ্গা বিষয়ে স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন। রোহিঙ্গারা রাখাইনেই ফিরে যেতে চায়। সেটা তাদের জায়গা। জাতিসংঘ এবং অন্যান্য মানবাধিকার সংস্থার কাজ হবে, মিয়ানমারের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা। কিন্তু তারা সেটা না করে বাংলাদেশের উপর চাপ তৈরি করছে। এমনিতেই বাংলাদেশে ৪ থেকে ৫ লাখ চিহ্নিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী কক্সবাজারের টেকনাফ উখিয়া এলাকায় রয়েছে। সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এদের একটি নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে যাওয়ার। সেখানে মানবাধিকার সংস্থাগুলো চাপ তৈরি করছে। যেন সরকার এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। কিন্তু আমি মনে করি- সরকারের এই সিদ্ধান্তে অনড় থাকার সময় এসেছে। রাখাইনে এখনো ১২ লাখ রোহিঙ্গা রয়েছে। বাংলাদেশ কি সব রোহিঙ্গাদের এই দেশে পুনর্বাসন করবে? এটা কখনোই হতে পারে না।
ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, এইচআরডব্লিউসহ কয়েকটি মানবাধিকার সংস্থা বাংলাদেশের সব বিষয়েই নাক গলান। বাংলাদেশের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের বিপক্ষে তারা অবস্থান নিয়েছে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে যে গণহত্যা হয়েছে তারা এই হত্যাকারীদের বাঁচানোর জন্য বাংলাদেশের পিছনে লেগেছিল। এখনও তারা যুদ্ধাপরাধীদের জন্য কেঁদে মরে যাচ্ছে। গত ৬ মাস ধরে মিয়ানমার যে রোহিঙ্গাদের উপর বর্বরতা চালাচ্ছে- তাতে কিন্তু এই সংগঠনের কোনো মাথা ব্যাথা নেই। তাদের কষ্ট হলো ঠেঙ্গারচরে কেন সরকার রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করছে। জাতিসংঘ এবং আনান কমিশন একটি আইওয়াশ কমিটি। তারা মিয়ানমার সরকারের পক্ষেই সাফাই দিয়ে যাচ্ছে। সরকারকে এ ব্যাপারে কঠোর হতে হবে। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম