এসডিজি বাস্তবায়নে বেসরকারি খাতকে মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে : বাণিজ্যমন্ত্রী
জি আর পারভেজ: বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, পারস্পরিক আঞ্চলিক সহযোগিতা ও বেসরকারি খাতকে মুখ্য ভূমিকা পালনের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন করতে হবে। তবে সরকারি ও বৈশ্বিক সহযোগিতা ছাড়া বেসরকারি খাত এ ভূমিকা পালন করতে পারবে না। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি) বাংলাদেশ এবং ইউএনএসকাপ আয়োজিত এশিয়া প্যাসিফিক বিজনেস ফোরাম (এপিবিএফ)-২০১৭ এর দ্বিতীয় দিন রিজিওনাল ইনটিগ্রেশন টু অ্যাচিভ সাসটেইন্যাবল ডেভেলপমেন্ট শীর্ষক সেশনে তিনি এ কথা বলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুতগতিতে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) কৃষি খাতের অবদান ছিল ৭০ শতাংশ। এখন তা কমে ১৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। জিডিপিতে শিল্প ও সার্ভিস খাতের অবদান বেড়েছে। বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি কৃষি থেকে বেরিয়ে শিল্প ও সার্ভিস খাত নির্ভর হচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের ওপরে আছে। আমি আশা করি চলতি অর্থবছর শেষে প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ২ শতাংশ হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী বলেন, সন্ত্রাসবাদ, দারিদ্র্য, পানি বণ্টন ব্যবস্থাসহ অন্যান্য সমস্যা সমাধানে সংঘাত নয়, আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমেই সমাধান করতে হবে। দারিদ্র্য আমাদের অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ। এছাড়া কানেকটিভিটি, পাওয়ার, ট্রান্সপোর্টও এসডিজি অর্জনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে বাংলাদেশে বিনিয়োগের অনেক ক্ষেত্র রয়েছে। আমাদের প্রাইভেট সেক্টরও অনেক একটিভ।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসিডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন, এসডিজি শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়। পুরো এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য একটি লক্ষ্যমাত্রা। এসডিজি অর্জনের ক্ষেত্রে প্রাইভেট ও পাবলিক সেক্টরের মনিটরিং ও তত্ত্বাবধান প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে ইউনাইটেড ন্যাশন অ্যান্ড এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি অব ইএসসিএপির আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ড. শামসাদ আক্তার বলেন, গ্লোবাল জিডিপিতে প্রাইভেট সেক্টরের অবদান ৯০ শতাংশ। তাই এসডিজি অর্জনে প্রাইভেট সেক্টরের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বেসরকারি খাতকে মুখ্য ভূমিকা রাখতে হবে। এসডিজির অধিকাংশ গোলই (লক্ষ্য) বেসরকারি খাতের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। বেসরকারি খাতের কার্যকরি ভূমিকা ছাড়া এসডিজি অর্জন করা সম্ভব না। আর বেসরকারি খাতকে কার্যকরি ভূমিকা রাখার ক্ষেত্রে সরকারি ও বৈশ্বিক সহযোগিতা প্রয়োজন। সেই সঙ্গে বেসরকারি খাতের আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে এবং দুর্নীতি কমাতে হবে।
অন্যদিকে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) ভাইস প্রেসিডেন্ট (অপারেশন) ওয়েন চাই ঝাং বলেন, টেকসই উন্নয়নের জন্য সমন্বয় খুব জরুরি। উন্নয়নের জন্য নেওয়া সব প্রকল্পের মধ্যে সুষম সমন্বয়ের দিকে নজর দিতে হবে। পিপিপির মাধ্যমে নানা প্রকল্প কীভাবে বাস্তবায়ন করা যাবে তা ভাবতে হবে। বেসরকারি খাতকে উৎসাহ দিতে হবে। কীভাবে বহুমুখীকরণ অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা করা যায়, সেদিকে নজর দিতে হবে। শুধু দু-একটি খাতের ওপর নির্ভর করে শক্ত অর্থনীতি তৈরি করা যায় না। এ জন্য আমরা আগ্রহী দেশগুলোকে সহায়তা আগেও দিয়েছি, সামনে দেব। শক্ত অর্থনীতি তৈরি করতে হলে সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।
এশিয়া প্যাসিফিক বিজনেস ফোরামের দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের সভাপতিত্বে সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন নেপালের বাণিজ্যমন্ত্রী রোমি গাওচান তাসাকালি , আঙ্কটাডের মহাসচিব মুখিসা কিটুইসহ আরও অনেকে। সম্পাদনা: জাফর আহমদ