লালমনিরহাটে কর্তৃপক্ষের ভুলে দুইশ পরীক্ষার্থীর ফলাফল বিপর্যয়ের আশঙ্কা
লালমনিরহাট প্রতিনিধি: লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের ভুলের কারণে অন্তত ছয়টি মাদরাসার প্রায় দুইশ দাখিল পরীক্ষার্থী একটি বিষয়ে অকৃতকার্য হওয়ার শঙ্কায় রয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় ‘বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়’ বিষয়ে অংশ নেয়ার কথা থাকলেও তাদের ‘শারীরিক শিক্ষা’ বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হয়েছে। এ অবস্থায় আবশ্যিক এ বিষয়ে ভালো ফলাফল তো দূরের কথা, পাস করা নিয়েই চিন্তিত হয়ে পড়েছে পরীক্ষার্থীরা। পরীক্ষায় অংশ নেয়া অনেক পরীক্ষার্থী জানান, এ বিষয়ে তারা কৃতকার্য হতে পারবে না। পরীক্ষা শেষে অনেক শিক্ষার্থীকে কান্না-কাটি করতে দেখা গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর উপজেলার কাকিনা মহিমা রঞ্জন উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে উপজেলার ১৯টি মাদ্রাসার প্রায় ৫০৪ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। এর মধ্যে ছয়টি মাদ্রাসার ক্ষেত্রেই ঘটেছে বিষয় পরিবর্তনের ঘটনা। মাদরাসাগুলো হচ্ছে- মনিরাবাদ সুফিয়া একরামিয়া আলিম মাদরাসা, শাখাতি জব্বারিয়ো দাখিল মাদরাসা, ভুল্লারহাট আশরাফিয়া দাখিল মাদরাসা, দলগ্রাম দাখিল মাদরাসা, তেঁতুলিয়া দাখিল মাদ্রাসা ও কাশিরাম একরামিয়া আলিম মাদরাসা।
এসব মাদরাসার শিক্ষার্থীরা নবম শ্রেণি থেকে অন্য বিষয়ের সঙ্গে আবশ্যিক বিষয় হিসেবে বেছে নিয়েছিল ‘বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়’। দুবছর ধরে তারা এ বিষয়টি পড়ে আসছিলো। কিন্তু দাখিল পরীক্ষার প্রবেশপত্রে ‘বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়’ এর পরিবর্তে উল্লেখ রয়েছে ‘শারীরিক শিক্ষা’। ফলে শেষ পর্যন্ত তাদের শারীরিক শিক্ষা বিষয়ই পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়েছে। একাধিক মাদরাসায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিভিন্ন মাদরাসায় কম্পিউটার-ল্যাপটপ থাকলেও রেজিস্ট্রেশন-ফরম পূরণের মতো অনলাইন নির্ভর কাজগুলো করা হয় দোকানে গিয়ে। এ জন্য সংশ্লিষ্টদের অদক্ষতা ও দায়িত্বহীনতা রয়েছে। আর দোকানে রেজিস্ট্রেশন করতে গিয়েই মূলত বিষয় পরিবর্তন হয়ে যাওয়ার মতো ভুল হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। পরীক্ষায় অংশ নেয়া কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, তাদের পরীক্ষা ভালো হয়নি। একদিনের পড়াশুনায় এ বিষয়ে তাদের পাস করা সম্ভব হবে না। মনিরাবাদ সুফিয়া একরামিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. গোলাম আযম মওদুদী বিষয় পরিবর্তনের ঘটনাটি তার মাদ্রাসার দায়িত্বরতদের ভুল স্বীকার করে জানান, গত মঙ্গলবার শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের বই শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয়। এতে কিছুটা হলেও পরীক্ষার্থীদের ক্ষতি হবে বলে স্বীকার করেন তিনি। কালীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আফরোজা বেগম বলেন, ‘একটি মাদরাসা থেকে বিষয়টি আমাকে জানানো হয়েছে। তবে বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।’ সম্পাদনা: মুরাদ হাসান