প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা না পাওয়ায় বঙ্গবন্ধুর পৈত্রিক বাড়ি পুরনো আদলে ফিরছে না
তরিকুল ইসলাম সুমন: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের টুঙ্গিপাড়ার পৈত্রিক বাড়িটি পুরনো কাঠামোয় ফিরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ ১০ মাসেও শুরু করা সম্ভব হয়নি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ১৮ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে মন্ত্রিসভার বৈঠকে স্থপতি আবু সাঈদ এম আহমেদ এ সংক্রান্ত নকশা এবং করনীয় বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীসহ সভাসদদের জানিয়েছিলেন।
সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধুর পৈত্রিক বাড়িটি নির্মিত হয়েছিল ১৮৫৪ সালে। সে হিসেবে এই বাড়ির বর্তমান বয়স প্রায় ১৬৩ বছর। তৈরির আদিতে এক রকম ছিল। এরপর বিভিন্ন সময়ে কিছু কিছু পরিবর্তন হয়েছে। সে সব বিবেচনা করে তিনটি প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে। তবে তিনটি প্রস্তাবই পুরনো আদলকে কেন্দ্র করে। বঙ্গবন্ধুর বাড়ির কাছে তাদেরই বংশধরের আরেকটা বাড়ি আছে, সেটাও সংস্কার করা হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায় বাড়িটির পুরনো কাঠামো ঠিক রেখে সংস্কার করা হয়েছিল। কিন্তু এ সংস্কারে বাড়ির রংসহ বেশকিছু কাঠামো পরিবর্তন হয়েছে। পুরনো ভবন সংস্কারের যে পদ্ধতি ও নিয়ম আছে, সেটি অনুসরণ করা হয়নি। পুরনো বাড়িগুলো সাধারণত চুন সুরকির হয়, ইটের আকারও ভিন্ন হয়। কিন্তু দেখা গেছে, বাড়ি সংস্কারে সিমেন্ট ও রংয়ের ব্যবহার হয়েছে।
কোনো ভবন বা স্থাপনা একশ বছরের বেশি পুরনো হলে সেটি প্রতœতাত্ত্বিক ঐতিহ্যে পরিণত হয়। বঙ্গবন্ধুর পৈত্রিক বাড়িও তেমনি একটি। এ ভবন সরকারিভাবেই সংরক্ষণ করা সম্ভব। বঙ্গবন্ধুর বাসভবন তো ঐতিহ্যের অংশ। তারপরও সব কিছু প্রধানমন্ত্রীর উপর নির্ভর করছে।
প্রতœতত্ত্ব অধিদফতরের মহাপরিচালক ও সরকারের অতিরিক্ত সচিব মো. আলতাফ হোসেন জানান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের টুঙ্গিপাড়ার পৈত্রিক নিবাস প্রায় ১৬৩ বছরের পুরনো। এটি তৈরির পর থেকে নানাভাবে পরিবর্তন হয়েছে। বেশ কয়েরবার সংস্কারও করা হয়েছে। ঐতিহাসিক ভবন হিসেবে এটি সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। এ জন্য ভবনটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছোটবেলায় যেভাবে দেখেছেন বা তার পরামর্শ অনুযায়ী পুরনো আদলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু এখনো আমরা এটি সংরক্ষণের জন্য কোনো অনুমতি পাইনি। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা পেলেই আমরা আমাদের কাজ শুরু করতে পারবো।
উল্লেখ্য, ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জ জেলা সদর থেকে ১৯ কিলোমিটার দূরে টুঙ্গীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। সম্পাদনা: আনিসুর রহমান তপন