ইমরুল শাহেদ: রুটিন কাজের অংশ হিসেবে মার্কিন ফেডারেল ইমিগ্রেশনের এজেন্টরা গত সপ্তাহে চারটি রাজ্যে অভিযান চালিয়ে বৈধ কাগজপত্র নেই এমন শত শত অভিবাসীকে গ্রেফতার করেছে বলে গ্লোবাল নিউজ জানিয়েছে। এ তথ্য জানানো হয়েছে শুক্রবার। আদালত সাতটি মুসলিম দেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের একটি নির্বাহী আদেশ স্থগিত করার পর এ অভিযান জোরদার করা হয়। ন্যাশনাল ইমিগ্রেশন ফোরামের পরিচালক আলী নূরানি বলেছেন, ‘এতে ইমিগ্রান্টদের ঘর-বাড়ি ও স্থানীয় আমেরিকানদের পরিবারের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। কারণ স্থানীয়দের অনেকেই ইমিগ্রান্টদের পছন্দ করে।’ তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘ইমিগ্রান্টদের ওপর চালানো অভিযানের কারণে সবাই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে।’ এনফোর্সমেন্ট এ্যান্ড রিমোভাল ফর দ্যা লস অ্যাঞ্জেলস ফিল্ড অফিস অব ইউএস ইমিগ্রেশন এ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট-এর পরিচালক ডেভিড মারিন বলেছেন, তারা আটলান্টা, নিউইয়র্ক, শিকাগো, লসএঞ্জেলস ও তার আশপাশের এলাকায় অভিযান চালানো হয়েছে। তিনি বলেন, ক্যালিফোর্নিয়ার দক্ষিণাঞ্চল থেকে গ্রেফতার হওয়া ১৬১ জনের মধ্যে মাত্র পাঁচজনও ওবামা প্রশাসনের কাছ থেকে অগ্রাধিকার পেত না।
যেসব এজেন্সি এ অভিযান পরিচালনার কাজ করছে তারা এ পর্যন্ত কত জনকে গ্রেফতার করেছে তার সংখ্যা প্রকাশ করেনি। আটলান্টা অফিসের দায়িত্বে থাকা ব্রায়ান কক্স বলেছেন, তিনটি রাজ্য থেকে ২০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মেরিন বলেছেন, লসএঞ্জেলস হলো সর্ববৃহৎ কাউন্টি। এখান থেকে ১৬১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মেরিন পাঁচ দিনের এ অভিযানকে ‘এনফোর্সমেন্ট সার্জ’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন,
এটা হল রুটিন কাজ। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময়ও গত গ্রীষ্মে লসএঞ্জেলসে এ ধরনের অভিযান চালানো হয়েছে। মেরিন বলেন, ‘আইসিই চেকপয়েন্টস নিয়ে যেসব প্রচারণা হচ্ছে তা একেবারেই মিথ্যা, বিপজ্জনক ও দায়িত্বহীন।’ তিনি বলেন, ‘এ ধরনের প্রচারণাই আতংক ছড়ায়।’ তিনি বলেছেন, ক্যালিফোর্নিয়ার দক্ষিণাঞ্চল থেকে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের মাত্র ১০ জনের কোনো অপরাধের রেকর্ড নেই। এদের মধ্যে পাঁচজনের দেশ ত্যাগের নির্দেশ রয়েছে।
ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২৬ জানুয়ারি যে স্থগিত হয়ে যাওয়া নির্বাহী আদেশ দিয়েছিলেন সে সময়ই তিনি বলেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে এক কোটি ১০ লাখ অভিবাসী অবৈধভাবে বসবাস করছে। ট্রাম্প বলেছেন, তিনি অপরাধের সঙ্গে জড়িত অভিবাসীদের মধ্য থেকে অন্তত ৩০ লাখ লোককে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত করবেন।
লাস ভেগাসের নেভাডা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিবাসন আইন সংক্রান্ত প্রফেসর মাইকেল কাগান বলেছেন, এসব অভিযান যে ইঙ্গিত করছে তা হলো ট্রাম্প প্রশাসনের সময় এ অভিযান আরও বেশি জোরালো হবে এবং দেশ থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনা বেশি ঘটবে। সূত্র : গ্লোবাল নিউজ, ওয়াশিংটন পোস্ট