ইসমাঈল হুসাইন ইমু ও মাসুদ আলম: রাজধানীতে দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্টদের শরীরে ‘বডি ওন ক্যামেরা’ ব্যবহার কমে গেছে। বিভিন্ন গ্ররুত্বপূর্ণ মোড়ে গুটিকয়েক সার্জেন্টকে এই ক্যামেরা ব্যবহার করতে দেখা গেলেও বেশিরভাগ সার্জেন্টই ক্যামেরা ব্যবহার করছেন না।
ক্যামেরা ব্যবহার কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ট্রাফিক সার্জেন্ট জানান, সম্প্রতি উল্টোপথে বিচারপতি, মন্ত্রী ও এমপিদের গাড়ি চলাচলের দৃশ্য ধরা পড়ে সার্জেন্টদের ক্যামেরায়। তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে উচ্চ আদালতে একটি রিটও হয়। তলব করা হয় পুলিশ কমিশনারকে। আদালত সূত্র জানিয়েছে, বডিতে ক্যামেরা লাগানোর কোনো আইনও নেই। তবে মাঝে মধ্যে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে ক্যামেরা ব্যবহার করা হয় বলে সার্জেন্টরা জানান।
একই শর্তে একজন ট্রাফিক সদস্য বলেন, ট্রাফিক পুলিশের মামলা রেকর্ড ছাড়াও সড়কে চলাচলরত যানবাহন নিয়ন্ত্রণসহ বহুবিধ কাজ থাকে। এছাড়া ক্যামেরাটি পরিধানের জন্য ব্যাকপেকের জন্য একটি যন্ত্র ও মাথায় আটকানোর জন্য অপর একটি যন্ত্রের প্রয়োজন হয়। দায়িত্ব পালনের সময় একজন ট্রাফিক পুলিশ সদস্য পজ মেশিন ও মাথায় হেলমেট ব্যবহার করে থাকেন। এ কারণে ক্যামেরাটি শরীরের সঙ্গে যুক্ত করা সম্ভব হয়ে উঠে না। ব্যবহারে কষ্টসাধ্য হওয়ায় ক্যামেরা পরিধান করা সম্ভব হয় না।
সূত্র জানায়, মামলা রেকর্ডের সময় নানা তদবিরসহ অপরাধ অস্বীকার করে ট্রাফিকের সিনিয়র কর্মকর্তাদের কাছে মিথ্যে বলে থাকেন অনেকে। এতে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের নানা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে ক্যামেরার ব্যবহার শুরু হয়। এটি ব্যবহারে তেমন সফলতা না থাকলেও মামলার সংখ্যা বেড়েছে বলে ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
জানা যায়, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর শাহবাগে ডিএমপির তৎকালীন কমিশনার (বর্তমানে র্যাব মহাপরিচালক) বেনজীর আহমেদ পুলিশে প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতার ধারাবাহিকতায় নতুন এই প্রযুক্তির উদ্বোধন করেছিলেন। ওই সময় ১৫টি ক্যামেরা দিয়ে কার্যক্রম শুরু করা হয়। পরে আরও ৪০০ ক্যামেরা যুক্ত করার কথা ছিল। এটি হাই রেজুলেশনের ১৬ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা, যার মাধ্যমে ৮ ঘণ্টা অডিও ও ভিডিও রেকর্ডিং করা যায়। এটি চাইলে কমান্ডসেন্টার থেকেও দেখা যাবে। ২০১৩ সালে এই প্রযুক্তি আমেরিকান পুলিশ প্রথম ব্যবহার করেছে। প্রতিটি ক্যামেরার মূল্য ২০ হাজার টাকা। সম্পাদনা: এনামুল হক