প্রতিটি জেলায় সংগঠনিক সফর তৃণমূলের বিরোধ মীমাংসা করে দলকে নির্বাচনমুখী করতে চায় আওয়ামী লীগ
জয়ন্ত আচার্য : প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশনারের নাম ঘোষণা হওয়ার পর বেশ স্বস্তিতে রয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা ধারণা করছেন, ঘোষিত নির্বাচন কমিশনারদের মেনে নিয়েই বিএনপিকে নির্বাচনে আসতে হবে। এ কারণে ক্রমেই নির্বাচনমুখী হয়ে উঠছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে আগামী জাতীয় সংসদের নির্বাচন করার টার্গেট করে দলটি সংগঠনকে শক্তিশালী করার নানা উদ্যোগ নিয়েছে। জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায়ে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৃণমূলে নেতাদের মধ্যে যে তীব্র বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে তার নিরসন চায় দলটি। এ কারণে আগামী কয়েক মাস প্রতিটি জেলায় যুগ্ম সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকদের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় নেতারা জেলা সফর করবে। স্থানীয় পর্যায়ে সমাবেশ করা হবে। কেন্দ্রীয় নেতাদের সফরের মধ্যে দিয়ে তৃণমূলের সৃষ্ট বিরোধ মীমাংসার চেষ্টা করা হবে। সেই সাথে দলের ভাবমূর্তি দারুণভাবে নষ্ট করছে এমন নেতাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছে কেন্দ্রীয় কমিটি।
এদিকে চলছে আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের জরিপের কাজ। জানা গেছে, দলকে শক্তিশালী করতে এ বছরের মধ্যেই আওয়ামী লীগের সকল অঙ্গ সংগঠনের সম্মেলন করা হবে।
দলীয় সূত্র জানায়, প্রতিটি জেলায় দলীয় সাংগঠননিক সফরের জন্য সময় নির্ধারণ করা হচ্ছে। আগামী জুন মাসের মধ্যে কেন্দ্রীয় নেতারা জেলা সফর শেষ করবেন। সফরে যেসব উপজেলায় এখন সম্মেলন হয়নি সম্মেলন করার উদ্যোগ নেবেন। জেলায় পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি না থাকলে তা করার চেষ্টা করবেন। মিটাবেন দলীয় কোন্দল। তবে বিভাগীয় শহরগুলোয় ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় নেতারা সফর করে এসেছেন।
সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় নেতাদের সফরের মধ্যে দিয়ে সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রমের প্রচার তৃণমূলে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করবেন। এজন্য সফরের সময় কেন্দ্রীয় নেতারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে লাগাতার দুই দফা সরকারের ৮ বছরের উন্নয়নের বিভিন্ন তথ্য ও ডকুমেন্ট তৃণমূলে পৌঁছে দিবেন।
জানা গেছে, ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে আওয়ামী লীগের প্রধান অঙ্গ সংগঠন যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ, কৃষক লীগ, মহিলা লীগ, যুব মহিলা লীগের মেয়াদ। দলকে সুসংগঠিত করতে এ বছরের মধ্যে পর্যায়ক্রমে এসব সংগঠনগুলোর সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক মহল।
সূত্র জানায়, একটি সংস্থা প্রতিটি সংসদীয় নির্বাচনি আসনের প্রথম দফার জরিপের কাজ শেষ করেছে। তারা বর্তমান সংসদ সদস্যের সার্বিক অবস্থা, সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা করেছে। সূত্র জানায়, শরিকদের ৫০টি আসন ছেড়ে দিয়ে বাকি ২৫০ আসনে আওয়ামী লীগ নির্বাচন করতে চায়। কার্যত বিএনপিকে চাপের মুখে রেখে আগামী সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি আওয়ামী লীগ শেষ করতে চায়।
এসব প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ অগ্রসর হচ্ছে। দলকে শক্তিশালী করতে কেন্দ্রীয় নেতারা সাংগঠনিক সফর করছেন। তারা তৃণমূলকে ঢেলে সাজাবেন। আগামী সংসদ নির্বাচনে জয়ের লক্ষ্যেই আওয়ামী লীগ কাজ করছে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহম্মদ হোসেন বলেন, তৃণমূলের বিরোধ মীমাংসা করে দলের নেতাকর্মীদের আগামী সংসদ নির্বাচনমুখী করাই বড় চ্যালেঞ্জ। সেই লক্ষ্যেই আমরা কাজ করছি। কেন্দ্রীয় নেতারা জেলা ও উপজেলায় সফর করছেন।