হাসান আরিফ: পদ্মা সেতু প্রকল্পে পরামর্শক নিয়োগে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগে দায়ের করা মামলা ও বিশ্বব্যাংকের আনা অভিযোগ কানাডার আদালত খারিজ করে দিয়েছে। এই বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের কর্তমর্কাদের কথা বলতে নিষেধ করা হয়েছে বিশ্বব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে। এই কারণে তারা এই বিষয়ে কোনো মন্ত্রব্যও করতে রাজি হননি। তারা বলেছেন, এই বিষয়ে কোনো প্রকার কথা বলা যাবে না। যা বলার অফিসিয়ায়ি বলা হবে। তাছাড়া নিষেধাজ্ঞাও রয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের কর্তমর্কাদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। ঢাকার কর্মকর্তারা এই ব্যাপারে কথা না বললেও এ বিষয়ে গত শনিবার বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ, নেপাল ও ভূটানের জন্য নিয়োজিত কান্ট্রি ডিরেক্টর কিমিয়াও ফ্যান শিরোনামহীন একটি স্টেটমেন্ট দেন। যা বিশ্বব্যাংকের ওয়েবসাইটে নিউজ সেকশনের প্রেস রিলিজ হিসেবে রয়েছে। সেটিতে সরাসরি পদ্মা সেতু বিষয়ক কোনো কিছুর উল্লেখ না থাকলেও দুর্নীতি বিষয়ক কথার উল্লেখ রয়েছে। তবে ঢাকা অফিসের মিডিয়া বিভাগের কর্মকর্তা মেহরিন এ মাহবুব এটিকে পদ্মা সেতু বিষয়ক বিশ্বব্যাংকের প্রতিক্রিয়ায় বলে জানিয়েছেন।
কানাডার আদালত কর্তৃক পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের আনা দুর্নীতির অভিযোগের ভিত্তিতে পদ্মা সেতু প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ করা ঋণ বাতিল করেছিল বিশ্বব্যাংক, সেই দুর্নীতির মামলাকে ‘অনুমানভিত্তিক’ বলে উল্লেখ করেছেন কানাডার একটি আদালত। কানাডার সংবাদমাধ্যম টরন্টো স্টার শুক্রবার এই বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
এ প্রসঙ্গে বিশ্বব্যাংকের মন্তব্য জানতে চাইলে ঢাকায় নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর জিমিয়াও ফান-এর পক্ষে বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের মিডিয়া বিভাগের কর্মকর্তা মেহরিন এ মাহবুব বলেন, বিশ্বব্যাংকের ওয়েবসাইটে নিউজ সেকশনের প্রেস রিলিজই বিশ্বব্যাংকের প্রতিক্রিয়া।
উল্লেখ্য, পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির অভিযোগে ২০১৩ সাল থেকে বিশ্বব্যাংকের সব উন্নয়ন প্রকল্পে ১০ বছরের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষিত কানাডীয় প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিনকেও মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ওই রায়ে এসএনসি-লাভালিনের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কেভিন ওয়ালেস, প্রতিষ্ঠানটির আন্তর্জাতিক প্রকল্প বিভাগের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট রমেশ শাহ ও বাংলাদেশ-কানাডার দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকা ব্যবসায়ী জুলফিকার ভূইয়া এই মামলা থেকে অব্যাহতি পান।
এই দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে টানাপোড়েন ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশের ১২০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি বাতিল হয়ে যায়। পরে নিজস্ব অর্থায়নে এ প্রকল্প বাস্তবায়নে হাত দেয় বাংলাদেশ। দুর্নীতির অভিযোগে পদত্যাগ করেন তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন। সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরীর বিরুদ্ধেও ওই দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। সম্পাদনা: নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী