মোহাম্মদ আলী বোখারী, টরন্টো থেকে
কানাডার কোর্টে পরিচালিত মামলায় তিন গ্রেফতারকৃত আসামির নির্দোষ খালাসের পর পদ্মা সেতুর দুর্নীতি নিয়ে বাংলাদেশে অনেকেই এমনকি জাতীয় সংসদের সদস্যরা, সঙ্গে দেশের আইনমন্ত্রীও মামলা করার কথা বলেছেন। কিন্তু আদৌ কি তা সম্ভব? সেটি এক অমূল্য প্রশ্ন বটে!
বিশ্বব্যাংক ‘ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশনস ইমিউনিটি অ্যাক্ট’-এর অধীনে সুরক্ষাপ্রাপ্ত একটি প্রতিষ্ঠান। এই বিধান বা আইনের শিরোনামটি অনেকখানিই বলে দেয় তা কতটা পরিসরে পরিব্যাপ্ত এবং সুবিধাভোগী। সেই আইনটি ১৯৪৫ সালের ২৯ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ৭৯তম কংগ্রেসে পাস হয়। সেটির অস্তিত্ব টাইটেল ২২, চ্যাপ্টার ৭, সাব-চ্যাপ্টার ২৮-এ বিদ্যমান। অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সেখানেই বিশ্বব্যাংকের পার্থক্য। আর সেই সুবিধাটি বিশ্বের অপরাপর সরকারের মতোই একই সমতায় বিবেচিত। উদাহরণস্বরূপ, বিশ্বব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা নানা ধরনের কররেয়াত প্রাপ্ত। এই প্রতিষ্ঠান এবং তার কর্মচারীসহ নিকটাত্মীয়দের সহায়-সম্পত্তি কখনোই কোনো প্রকার তদন্ত কিংবা জব্দ হওয়া থেকে মুক্ত।
যুক্তরাষ্ট্রে ‘ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশনস ইমিউনিটি অ্যাক্ট’ পাস হয়েছে এই লক্ষ্যে যে, সেটির আওতাধীন প্রতিষ্ঠানসমূহ বহির্বিশ্বে আন্তর্জাতিক সেবা প্রদানে নিয়োজিত। এসব সেবামূলক কার্যক্রম যাতে যথোপযুক্তভাবে করতে পারে সেজন্য এই ইমিউনিটি দেওয়া হয়েছে। বিশ্বব্যাংেকের মতো ‘ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন’ বা ‘এফএডব্লিউ’ এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা বা ‘আইএলও’ অনুরূপ সুবিধাভোগী প্রতিষ্ঠান।
অতএব, এই আইনগত সুরক্ষা বা সুবিধা বিশ্বব্যাংকের রয়েছে। তবে মানবাধিকার ও কর্মচারী সুবিধা বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু কোর্টে স্বীকৃত ব্যতিক্রম রয়েছে; যদিও সেটা সীমিত। সেজন্য জানা দরকার, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সদস্যরা এবং অন্যান্য নেতৃবৃন্দ কিংবা দেশের আইনমন্ত্রী আসলে কী প্রেক্ষাপটে কীভাবে এবং কোথায় বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলা করবেন?
ই-মেইল: নঁশযধৎর.ঃড়ৎড়হঃড়@মসধরষ.পড়স