সীমান্তে হাতির উপদ্রব, সোলার পাওয়ার ফেন্সিংয়ের সুফল পাচ্ছে শেরপুরের পাহাড়ি জনগোষ্ঠী
শেরপুর প্রতিনিধি ঃ শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার সীমান্তে বন্য হাতির উপদ্রপ থেকে রক্ষা পেতে নির্মিত সোলার পাওয়ার ফেন্সিং ও বায়োলজিক্যাল ফেন্সিংয়ের সুফল পাচ্ছে গ্রামবাসীরা। উপজেলার সীমান্তবর্তী সড়কগুলোতে প্রবেশ করলে কিছুদূর পরপর বৈদ্যুতিক (সৌরবিদ্যুৎ) তারের সঙ্গে ‘সাবধান ও বিপদজনক’ চিহ্ন সম্বলিত সাইনবোর্ড ঝুলানো দেখা যায়। আবার কোথাও কোথাও লোহার পাইপের সঙ্গে ‘সাবধান! এটা হাতি চলাচলের পথ’ এ রকম লেখা সম্বলিত সতর্কবাণীর সাইনবোর্ড ঝুলানো দেখা যায়।
জানা গেছে, ১৯৯৫ সালে ২০/২৫টি বন্য হাতির দল ভারতের আসাম থেকে দলছুট হয়ে ঝিনাইগাতী গারো পাহাড়ে ঢুকে পড়ে। সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এর বাধায় বন্য হাতিগুলো আবাসস্থলে ফিরে যেতে পারেনি। বন্য হাতির সংখ্যা এখন শতাধিক। ধান ও কাঁঠাল পাকার সময় লোকালয়ে বন্য হাতির উপদ্রপ বাড়ে। গত ২ মাস আগে হাতির উপদ্রব উদ্বেগজনকভাবে বাড়ার ফলে বনবিভাগের উদ্যোগে সোলার পাওয়ার ফেন্সিং ও বায়োলজিক্যাল ফেন্সিংয়ের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। সৌরবিদ্যুতের এই বেড়ার জন্য বন্য হাতি লোকালয়ে ঢুকতে পারছে না বলে দাবি গ্রামবাসীদের। ফলে ২ মাস ধরে নির্বিঘেœ ঘুমাতে পারছেন তারা। জেলা বন্যপ্রানী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বন্য হাতির আক্রমণে এ উপজেলায় ২০১৬ সালে ৯ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে প্রায় ৫ শতাধিক মানুষ। অন্যদিকে হাতি মারা গেছে ৪টি। ক্ষতি হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলী জমি। এ অবস্থায় বনবিভাগ হাতি-মানুষের সহা-বস্থানের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। এজন্য বন্য হাতির প্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তবর্তী পাহাড়ী টিলায় লেবু ও বেতগাছের বাগান করা হয়েছে। পাশাপাশি সীমান্তে হাতির উপদ্রপ থেকে রক্ষা পেতে পরীক্ষামূলকভাবে বৈদ্যুতিক (সৌরবিদ্যুৎ) তার দিয়ে বেড়া নির্মাণ করা হয়েছে। ঝিনাইগাতী উপজেলার সীমান্তে ১১ কিলোমিটার ও নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তে ২ কিলোমিটার ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের বিশ্বব্যাংকের ৯১ লাখ টাকা ব্যয়ে সোলার পাওয়ার ফেন্সিং ও বায়োলজিক্যাল ফেন্সিংয়ের এ বেড়া দেওয়া হয়। এছাড়াও শতাধিক একর জমিতে বন্য হাতির খাবারের উপযোগী বাগান করা হয়েছে। উপজেলার ছোট গজনী গ্রামের বাসিন্দা অলেন সাংমা (৪৮) ও বেরুনীকা মারাকসহ (৬৫) অনেকেই জানান, সৌরবিদ্যুতের এই বেড়ার জন্য বন্যহাতি পাহাড়ী এলাকায় ঢুকতে পারছে না। ফলে ২ মাস যাবৎ তারা নির্বিঘেœ ঘুমাতে পারছে। সম্পাদনা: মুরাদ হাসান