এস এম নূর মোহাম্মদ: প্রধান বিচারপতি সূরেন্দ্র কুমার সিনহা গতকাল আপিল বিভাগের রায়ে বলেছেন, যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাদ-। পরে এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, প্রধান বিচারপতি যদি তার রায়ে বিষয়টি লিখিতভাবে দেন তবে এটি সকলের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে। সুতরাং পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি না পাওয়া পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে কিছু বলা যাবে না। উল্লেখ্য, দ-বিধির ৫৭ ধারায় উল্লেখ রয়েছে যাবজ্জীবন মানে ৩০ বছর। কারাবিধিতে বন্দিরা রেয়াতও পেয়ে থাকেন। যাবজ্জীবন কারাদ- নিয়ে আবারও বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এর আগেও প্রধান বিচারপতির মন্তব্যে এ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাবাস। গতকাল এক হত্যা মামলার রায়ে এমন মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ। মামলার চূড়ান্ত রায়ে দুই আসামির মৃত্যুদ-ের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছেন আদালত। যেখানে যাবজ্জীবনের অর্থ আমৃত্যু কারাবাস হবে বলে মত দেন প্রধান বিচারপতি। এ বিষয়ে আইনজীবী খন্দকার মাহবুব বলেন, আজীবন কারাদ- যদি আমৃত্যু হয়ে থাকে তাহলে এদের রেয়াতের কি হবে। আমি আদালতকে বলেছি প্রধান বিচারপতির এ মন্তব্য যেন মামলার রায়ে না থাকে। এটা যদি থাকে তাহলে সব আসামির ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য হবে।
গতবছর জুনে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার পরিরদর্শনের সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, যাবজ্জীবন নিয়ে অপব্যাখ্যা হচ্ছে। যাবজ্জীবন অর্থ হলো একেবারে যাবজ্জীবন, রেস্ট অফ দ্য লাইফ। প্রধান বিচারপতি সে সময় বলেন, ব্রিটিশ আমলের দ-বিধিতে অনেক গরমিল রয়েছে। পরবর্তী সময়ে আমি এর ব্যাখ্যা দিব। বিষয়টি নিয়ে সে সময়ই আইনজীবীদের মধ্যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। প্রধান বিচারপতির নতুন এ রায়ে ধারণা করা হচ্ছে তিন হয়তো এই রায়তেই এর ব্যাখ্যা প্রদান করবেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, সাভারের ২ জনের মৃত্যুদ- মওকুফ করে যাবজ্জীবন দ- দিয়েছেন আদালত। তবে আদেশে বলেছেন, যাবজ্জীবন মানে ৩০ বছর নয়, আমৃত্যু কারাদ-। তখন আসামি পক্ষের আইনজীবীরা বলেছেন, যাবজ্জীবন মানে ৩০ বছর। জবাবে প্রধান বিচারপতি বলেছেন, মূল রায়ে এটার ব্যাখ্যা থাকবে।
অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, পূর্ণাঙ্গ রায়টি পেলে একটি দিক নির্দেশনা পাব বলে আশা করি। এ সিদ্ধান্ত অন্য মামলাতেও প্রযোজ্য হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, পূর্ণাঙ্গ রায়ের জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।
জানা যায়, ২০০১ সালে সাভারে জামান নামের এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ২০০৩ সালে দ্রুত বিচার আদালত আতাউর, আনোয়ার ও কামরুল ইসলামকে মৃত্যুদ- দেন। হাইকোর্টে আপিলের পর বিচারিক আদালতের দ- বহাল থাকে। এরপর আসামি আনোয়ার ও আতাউর সাজা কমানোর জন্য আপিল বিভাগে আবেদন করেন। কামরুল পলাতক থাকায় আপিলের সুযোগ পাননি। শুনানি শেষে গতকাল আপিল বিভাগ দুই আসামির সাজা কমিয়ে যাবজ্জীন কারাদ-ের রায় দেন। সম্পাদনা: বিশ্বজিৎ দত্ত