সমাজে সাম্প্রদায়িক মনোভাবকে পরিবর্তন করতে হবে : রাশেদ খান মেনন
ফারুক আলম : বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন বাস্তবায়ন করতে হলে সমাজের মধ্যে সাম্প্রদায়িক মনোভাবকে পরিবর্তন করতে হবে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যেসব সাম্প্রদায়িত দ্বন্দ্ব হচ্ছে সেটির মূল্যে সম্পত্তি বেদখলের বিষয়টি জড়িত বলে মত দেন তিনি।
গতকাল রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন ২০০১ বাস্তবায়ন পরিস্থিতি এবং করণীয়’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
পর্যটনমন্ত্রী বলেন, জাতীয় ও জেলা পর্যায়ে মনিটরিং সেল গঠন করলেই চলবে না তা বাস্তবায়ন করতে হবে। আমাদের দেশে সকল সাম্প্রদায়িকতার মধ্যে যখন দুর্নীতি দেখা দেয় তখন আরও বড় সমস্যার সৃষ্টি হয়। এ জন্য লড়াই ছাড়া বিকল্প পথ নেই।
তিনি আরো বলেন, অর্পিত সম্পত্তির বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের কোনো কাজ আছে কি না আমি জানি না। কেনইবা আইন মন্ত্রণালয় অনুশাসন দিচ্ছেন, এটা বোধগম্য নয়। সুযোগ পেলে অর্পিত সম্পত্তি আইনের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে উত্থাপন করার চেষ্টা করবো বলে আশ্বাস দেন মন্ত্রী।
অর্থনীতিবিদ ড. আবুল বারকাত ও তার সহযোগীদের গবেষণায় বলা হয়েছে, দেশের মোট ২৭ লাখ হিন্দুখানার (হাউজহোল্ড) মধ্যে ১২ লাখ অর্থাৎ মোট হিন্দুখানার ৪৪ ভাগই অর্পিত সম্পত্তি আইনে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১৯৪৭ সালে ধর্মের ভিত্তিতে দেশ ভাগের সময় এ দেশের মোট জনসংখ্যার ৩৭ শতাংশ ছিল হিন্দু সম্প্রদায়ভুক্ত। যা বর্তমান সময়ে নেমে এসেছে মাত্র ৯ শতাংশ। অর্থাৎ হিন্দু জনসংখ্যার দেশত্যাগের কারণগুলোর মধ্যে অর্পিত সম্পত্তি আইনের প্রভাব ছিল সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ।
এদিকে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ড. বীরেন শিকদার বলেন, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইনটি যে অবস্থায় আছে তাতে করে আইন কার্যকর, দ্রুত বিচার এবং রায় কার্যকর করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা দেখা দিচ্ছে। এই প্রতিবন্ধকতা দ্রুত দূর করতে হবে।
বীরেন শিকদার বলেন, আইনটি বাস্তবায়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতার ঘাটতি নেই। কিন্তু তারপরও কেন জানি আইনটি সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে না। আইন বাস্তবায়নের এ আন্দোলনে প্রথম থেকেই আছি। এখন দরকার বিচার কাজ ত্বরান্বিত করা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেনÑ মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল, রানা দাশগুপ্ত, কামাল লোহানী প্রমুখ।