প্রদোষে প্রাকৃতজনের ¯্রষ্টা শওকত আলী জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে
রিকু আমির: সাহিত্যিক শওকত আলীর ছেলে, আসিফ শওকত কল্লোল, জানালেন বাবার অবস্থা খুব ভাল না। ডাক্তার কিছুই বলতে পারছে না। এটি খুবই যন্ত্রণার। তাই নিজেকে বেশ অসহায় লাগছে। আমি যেন বাবার লেখা সেই মেয়েটা যে একটা অসহায় অবস্থায় দাঁড়িয়ে থেকে বলছে বাবা আপনি যান। বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শক্তিশালী লেখক। একুশে পদক ও বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক শওকত আলীর হৃদপি-ের গুরুতর সমস্যা নিয়ে রাজধানীর ল্যাব এইড হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
হার্ট অ্যাটাক হবার পর বুধবার দুপুরে ভর্তির পর থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ৮০ বছর বয়সোর্ধ্ব এই কথাসাহিত্যিকের শারীরিক অবস্থার উল্লেখযোগ্য উন্নতি নেই বলে দৈনিক আমাদের অর্থনীতিকে জানিয়েছেন হাসপাতালের করপোরেট কমিউনিকেশন বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার সাইফুর রহমান লেনিন।
শওকত আলী ল্যাব এইড হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মাহবুবুর রহমানের অধীনে চিকিৎসাধীন, তাকে রাখা হয়েছে করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ)-তে।
সাইফুল ইসলাম লেলিন বলেন, তার প্যারামিটার ঘন ঘন উঠানামা করছে। এ থেকে বলতে হয়, তার অবস্থা আসলে ভাল নয়। ভর্তির সময় থেকে ৪৮ ঘণ্টা অতিবাহিত না হলে পরিষ্কার মন্তব্য করা যাচ্ছে না।
শওকত আলীর মেজো সন্তান আসিফ শওকত কল্লোলকে দাঁড়ানো অবস্থায় পাওয়া যায় সিসিইউর সামনে। তিনি তার পিতার সুস্থতার জন্য সকলের আশীর্বাদ চেয়েছেন।
৫০’র দশক থেকে লেখালেখি জগতে হাঁটা শুরু করা অধ্যাপক শওকত আলী ১৯৬৮ সালে ছোটগল্পের অবদান রাখায় বাংলা একাডেমি পুরস্কার, ১৯৯০ সালে একুশে পুরস্কার অর্জন করেন।
ছাত্রাবস্থায় ছাত্র ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত থাকা শওকত আলী টানা ২৬ বছর তৎকালীন জগন্নাথ কলেজে বাংলা বিভাগে অধ্যাপনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এ চাকরির শেষভাগে তিনি বাংলা বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব পালন করছিলেন। ১৯৯৬ সালে সঙ্গীত কলেজ থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
আসিফ শওকত কল্লোল বলেন, বাবার লেখা বই বর্তমানে বাংলাদেশের কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ্য। ভারতের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত বইও আছে।
শওকত আলীর স্ত্রী শওকত আরা বেগম ১৯৯৬ সালে মৃত্যুবরণ করেন। এই দম্পতির তিন ছেলে। বড় ছেলে অধ্যাপক ডা. আলমগীর একজন কিডনি বিশেষজ্ঞ। তিনি মার্কিন য্ক্তুরাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে কর্মরত। মেজো ছেলে আনিস শওকত কল্লোল দেশের ইংরেজি জাতীয় দৈনিক ঢাকা ট্রিবিউন- এ প্রধান প্রতিবেদক হিসেবে কর্মরত। ছোট সন্তান আলিফ শওকত স্ট্যান্ডার্ড চ্যাটার্ড ব্যাংকে কর্মরত। তিনি বাস করতেন রাজধানীর পুরান ঢাকার টিকাটুলিতে নিজ বাসায়। সম্পাদনা: বিশ্বজিৎ দত্ত