বিশ্বের ৯৩টি দেশের স্লাইস তৈরি হয়েছে মুহূর্তেই বাংলাভাষায় অনুবাদ করা যাবে
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী: আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট এর জাদুঘরে বঙ্গবন্ধু এর উপর একটি কর্নার করা হবে। সেখানে তার লেখনী, তার ভাষণ, ১৯৫২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত তার যে অবদান এই সব বিষয়েরও উপর তথ্য থাকবে। তার ৭ মার্চের ভাষণ এখন সেখানে রয়েছে। তবে অন্যান্য অনেক জিনিসই রাখা হবে। সেগুলো এখনও সংগ্রহ করা শেষ হয়নি। তা শেষ করার কাজ চলছে। গ্যালারীতে সেগুলো দর্শনার্থীদের জন্য রাখা হবে। সেই সঙ্গে গবেষকরাও এই সব বিষয় তাদের গবেষণার কাজে ব্যবহার করতে পারবে। এছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ভাষার স্লাইড থাকবে। ৯৩টি স্লাইড তৈরি করা হয়েছে। মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট এই কাজ করতে গিয়ে অনেক সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। আমাদের এখানে অনেক সমস্যা, তাহলো সব ভাষা বোঝে এমন লোক নেই। যারা শিখেন তারা নিজেদের কাজ চলার জন্য যতখানি দরকার ততখানিই শিখেন। এই কারণে ওই সব ব্যক্তিকেও কাজে লাগানো যাচ্ছে না। ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে যে কোনো ভাষা থেকে যাতে মুহূর্তেই বাংলা ভাষায় অনুবাদ করা যায় সেই কাজও চলছে। ২০ ভাগ কাজ শেষ।
ইনস্টিটিউট সূত্র জানায়, ভাষার বিষয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি ও আইটি বিশেষজ্ঞরা কাজ করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালকের কাছে। এই জন্য তিনিও আগ্রহ করে বেশ কয়েকজনকে কাজ করার সুযোগ দিয়েছেন। কিন্তু একপর্যায়ে গিয়ে তারা আর কাজ শেষ করতে পারেনি। বিভিন্ন রকম অসম্পূর্ণতা দেখতে পেয়েছেন। পরে আবার তাদেরকে বলা হয়েছে আরও কাজ শিখে আসার জন্য।
মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. জীনাত ইমতিয়াজ আলী বলেন, যখন মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটটি করা হয়েছিল ওই সময়ে ভাষার বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ততবেশি ছিল না। আবার আইটি বিষয়ে ভাষা নিয়ে যারা কাজ করেন সেই রকম দক্ষ লোকও নেই। এই কারণে শুরুতে যখন জনবলের কাঠামো করা হয় সেখানে তেমনভাবে আইটি বিশেষজ্ঞ রাখা সম্ভব হয়নি। এক একটি ভাষার জন্য সফটওয়্যার তৈরি করতে অনেক স্টেজ আছে। সেই সব স্টেজে যারা কাজ করে তাদেরকে জানতে হবে। একটা বাংলা ভাষার সফটওয়্যার বানানো হলে পরর্বর্তীতে সেটাতে সংশোধন আনার দরকার হতে পারে। সংযোজন ও বিয়োজন করতে হবে পারে। উন্নয়নও করার দরকার হতে পারে। এছাড়াও ডকুমেন্টেশনও করার দরকার আছে। কিন্তু কাজ করতে গিয়ে অনেক সমস্যাই দেখা দিচ্ছে। আমরা এই সব সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করছি।
এখন গুগলে যে অনুবাদ হয় সেখানে বাংলাভাষায় সঠিক অনুবাদ হয় না। আমরা আমাদের বাংলাভাষার যথাযথ অনুবাদ যাতে হয় সেই জন্য কাজ শুরু করেছি। আগামীতে যে কোনো ভাষা থেকে বাংলা ভাষায় যে কোনো লেখনী অনুবাদ করা যাবে।
ডকুমেন্টেশন তৈরি করার পাশাপাশি করপাস প্ল্যানিং করতে হবে। সফটওয়্যার করতে হবে। এই জন্য গবেষকও তৈরি করতে হবে। তাদেরকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। বাংলাভাষা ওসিআর নেই। ভয়েস টু টেক্স নেই। আর টেক্সট টু ভয়েস নেই। এগুলো করতে হবে।
জাতিসংঘের ইউএনএল ফাউন্ডেশন ্এর মাধ্যমে কাজ চলছে। এটা জেনেভায় অফিস। ইতোমধ্যে ২০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। সেই কাজ শেষ হলে এরপর বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাভাষায়ও সব অনুবাদ করা যাবে।
ইমতিয়াজ আলী বলেন, আমরা আমাদের মাতৃভাষা সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ভাষা নিয়ে কাজ করছি। আস্তে আস্তে আমাদের কাজের পরিধি আরও বাড়বে।