ইভিএম প্রধানমন্ত্রীর ভোটারবিহীন নির্বাচনের আরেকটি ডিজিটাল প্রতারণা : রিজভী
কিরণ সেখ: ই-ভোটিং প্রধানমন্ত্রীর ভোটারবিহীন নির্বাচন করার আরেকটি ডিজিটাল প্রতারণা কী না তা নিয়ে জনমনে সংশয় দেখা দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।
গতকাল রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজেকে চিরস্থায়ীভাবে ক্ষমতায় রাখার জন্য গোটা নির্বাচনি ব্যবস্থাটাই আওয়ামীকরণ করা হচ্ছে। সুতরাং তার পক্ষে নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য ই-ভোটিং চালু করার ঘোষণা জনগণকে আরেকটি তামাশার বায়োস্কোপ দেখানো ছাড়া অন্য কিছু নয়।
তিনি বলেন, এই পদ্ধতি চালু হলে ভোট ‘ম্যানিপুলেট’ (কারসাজি) করা সরকারের জন্য সহজ হবে। এটি জনগণের ভোটকে নিজ উদ্দেশ্য সাধনে জালিয়াতি করার প্রচেষ্টামাত্র। এটি প্রধানমন্ত্রীর আরেকটি ভেল্কিবাজিরই বর্ধিত প্রকাশ।
প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের বিরোধিতা করে রিজভী বলেন, ১/ ১১-র সময় সাবেক সিইসি এ টি এম শামসুল হুদা ইভিএম চালুর প্রস্তাব করেছিলেন। তখন বুয়েটসহ কম্পিউটার বিশেষজ্ঞ এবং প্রায় সব রাজনৈতিক দল সেটির বিরোধিতা করেছিল। সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদও এই পদ্ধতিটি চালুর জোর প্রচেষ্টা চালান। পরীক্ষামূলকভাবে ২০১০ সালে প্রথম চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কয়েকটি কেন্দ্রে পরীক্ষামূলক এই পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ হয়। ওই সময়ে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এই পদ্ধতির বিরুদ্ধে আপত্তি তোলায় ইভিএম নিয়ে কাজী রকিবউদ্দীন ইভিএম চালু থেকে সরে আসেন।
তিনি বলেন, ভারত, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশ ই-ভোটিং পদ্ধতি চালু করলেও এটির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয় এবং সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এই পদ্ধতি দূর থেকে হ্যাক করা সম্ভব বলেই স্বচ্ছ নির্বাচনের স্বার্থে এই পদ্ধতি সেসব দেশে বাতিল করা হয়েছে। বাংলাদেশে এখনো অনেক মানুষ নিরক্ষর। এত টেকনিক্যাল বিষয় বোঝা তাদের জন্য কষ্টসাধ্য। এই পদ্ধতিতে সরকারের জন্য ভোট ম্যানিপুলেট করা খুবই সহজ হবে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ক্ষমতাসীনদের সকল ষড়যন্ত্র জনগণ রুখে দেবে বলেও সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন বিএনপির এ মুখপাত্র।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা আব্দুস সালাম, খায়রুল কবির খোকন, আসাদুল করিম শাহীন, অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, তাইফুল ইসলাম টিপু, মুনির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সম্পাদনা: এনামুল হক