বরিশালের জন্মভিটায় সম্মাননায় সিক্ত ক্রিকেটার মিরাজ ও রাব্বী
বরিশাল প্রতিনিধি: বাংলাদেশ ছাড়িয়ে বিশ্বে ক্রিকেটে এখন উজ্জল নক্ষত্র মেহেদী হাসান মিরাজ ও কামরুল ইসলাম রাব্বী। বর্তমান ক্রিকেটে দেশেতো বটেই, বিদেশের মাটিতেও তাদের সাফল্য অসামান্য। আর এ দুইজনেই বরিশালের কৃতি সন্তান। বিভিন্ন সময় মাঠের কৃতিতে দেশ ছাড়িয়ে বিদেশের মিডিয়াতেও ঝড় তুলেছেন এ দুই ক্রিকেটার। গড়েছেন একের পর এক রেকর্ড। বরিশালের এই দুই কৃতি সন্তানকে সম্মাননা দেওয়া হয়েছে শুক্রবার বিকেলে। পেয়েছেন ‘বরিশাল জেলা প্রশাসন পদক ২০১৭’। নিজ জন্মভিটায় এমন সম্মাননা আর মানুষের ভালবাসায় সিক্ত দুই ক্রিকেটার। নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে শুক্রবার বিকেলে তিনদিনব্যাপী জীবনানন্দ মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ দুই ক্রিকেটারকে সম্মাননা দেওয়া হয়। বরিশালের জেলা প্রশাসন ও বরিশাল ফাউন্ডেশনের আয়োজনে মেলার উদ্বোধণ করেন জাতীয় সংসদের প্যানেল স্পীকার এ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস এমপি। জেলা প্রশাসক ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার এসএম রুহুল আমিন, বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মুহাম্মদ জিয়াউল হক।
ক্রিকেটার মেহেদী হাসান মিরাজ বরিশাল নাকি খুলনার? এনিয়ে ভক্তদের কমবেশি মন কষাকষির ব্যাখ্যা দিয়েছেন স্বয়ং মিরাজ নিজেই। মেহেদী হাসান মিরাজ বলেছেন, ‘মিরাজ বরিশালের, মিরাজ খুলনার, সর্বোপরি মিরাজ বাংলাদেশের।’ জন্মস্থান থেকে সংবর্ধনা পাওয়ায় তারা দুইজনই নিজেদের ধন্য মনে করেন। একই অনুষ্ঠানে বরিশালের দুই কৃতি ক্রিকেটারকে জীবনানন্দ পদক-২০১৭ প্রদানের ঘোষণা দেয়া হয়। সূত্রমতে, মেহেদী হাসান মিরাজ বরিশালের বাকেরগঞ্জ জন্মগ্রহণ করলেও তার শৈশব কাটে খুলনায়। ১৯৯১ সালের ১০ডিসেম্বর বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালীতে জন্মগ্রহণ করেন কামরুল ইসলাম রাব্বী। তার (রাব্বী) শৈশবকাল কেটেছে বরিশাল নগরীতে। রাব্বাীর পিতা সেলিম খান পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর ও মা ছালমা বেগম একজন গৃহিনী। রাব্বী বরিশাল নগরীর উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। তিনি এখন ঢাকার আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করছেন। রাব্বী প্রথমে স্কুল ক্রিকেট প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ক্রিকেটে আসেন। পেসার হান্ট প্রোগ্রামে বরিশাল বিভাগে তিনি প্রথম হন।
ডানহাতি পেস মিডিয়াম বোলার কামরুল ইসলাম রাব্বী সর্বপ্রথম ২০০৭ সালে গ্রামীণফোনের আয়োজনে পেসার হান্টে নির্বাচকদের নজর কাড়েন। বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ সুজন তার দল ওল্ড ডিওএইচএস এ রাব্বীকে খেলার সুযোগ করে দেয়ার পর রাব্বি নিজেকে প্রমাণ করেন। পরবর্তীতে ২০০৮ সালের অক্টোবরে সিলেট বিভাগের বিপক্ষে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তার অভিষেক ঘটে। ওই ম্যাচে তিনি ব্যাট করেননি। কিন্তু ১৬ ওভার বল করে ৩৩ রান দিয়ে নিয়েছিলেন তিনটি উইকেট। এভাবে সকল পরীক্ষায় নিজেকে প্রমাণ করে আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ-২০১০ এর স্কোয়াডে জায়গা করে নেন। তারপর ২০১০ সালে নিউজিল্যান্ডে আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে তিনি বাংলাদেশের একজন সম্ভাবনাময়ী ক্রিকেটার হিসেবে আবির্ভূত হন। এরপর থেকে তিনি নিজেকে কার্যকরী একজন বোলার হিসেবে গড়ে তোলেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের একজন নিয়মিত ফাস্ট বোলার। সম্পাদনা: মুরাদ হাসান