তিন জেলায় কৃষিতে উৎপাদন বেড়েছে ১৫ শতাংশ
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি: পিরোজপুর, গোপালগঞ্জ, বাগেরহাট সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের ৫ বছরের কর্মকান্ডে ৩ জেলার কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে ১৫ শতাংশ । জমির উর্বরতা ঠিক রেখে কৃষক পানি সাশ্রয় করে একই জমিতে ৩ টি ফসল ফলায় কৃষকরা। এ কারণে কৃষকের আর্থ সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে। শুক্রবার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার কুশলী ও কাশিয়ানী উপজেলার ফুকরা গ্রামে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মঈন উদ্দীন আব্দুল্লাহর নেতৃত্বে কৃষি বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞরা এ প্রকল্পের প্রদর্শনী প্লট পরিদর্শনে আসলে প্রকল্পের পক্ষ থেকে এসব তথ্য জানানো হয়। এ সময় কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ নজমুল ইসলাম, কৃষি সম্প্রসারণের ডিজি মো. মঞ্জুরুল হান্নান, কৃষি গবেষণা ইনষ্টিটিউটের ডিজি আবুল কালাম আযাদসহ কৃষি বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন।
পিরোজপুর, গোপালগঞ্জ, বাগেরহাট সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প থেকে জানানো হয়, গত ৫ বছরে ৩ জেলার অন্তত ৬ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা, তিল, বাদাম, সূর্যমুখী, মুগ, মসুর, মটর, আলু, গম, ভুট্টা, সবজি, কলা, আম, মাল্টা, পেঁয়ারা, রসুন, হলুদ, মৌরি, জাউন, শোলক, ফিরিঙ্গি, কালোজিরা, ধনিয়ার ও মেথিসহ বিভিন্ন জাতের ফসলের প্রদর্শনী প্লট করা হয়েছে। প্রত্যেক প্লটে স্থানীয় জাতের তুলনায় এ জাতের ফসল ২ থেকে ৩ গুণ বেশি ফলেছে। অধিক ফলন দেখেই কৃষক সহজেই বারি উদ্ভাবিত জাতের দিকে ঝুকছেন। প্রকল্প থেকে অর্জিত জ্ঞান কাজে লাগিয়ে ও বীজ সংরক্ষণ করে ৩ জেলার কৃষক উৎপাদন বৃদ্ধি, কৃষি উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে ভূমিকা রাখছেন। টুঙ্গিপাড়া উপজেলার কুশলী গ্রামের কৃষক ফিরোজ মোল্লা বলেন, এ প্রকল্প বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনষ্টিটিউট (বারি) উদ্ভাবিত সবজি, ডাল, আলু, তৈল বীজ, গম, ভুট্টা, ফল ও মসলা জাতীয় ফসলের চাষাবাদে প্রথম আমাদের উদ্বুদ্ধ করে। এ অঞ্চলে আমরা বারি উদ্ভাবিত জাতের ফসল প্রদর্শনী প্লটে আবাদ করে অধিক ফসল ঘরে তুলেছি। কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করে আয় বৃদ্ধি করেছি। আমাদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটছে। আমাদের প্রদর্শনী প্লটে ফসলের বাম্পার ফলন দেখে এ অঞ্চলের কৃষক বারি উদ্ভাবিত জাতের ফসল আবাদে উৎসাহিত হচ্ছেন। কৃষিতে অনুন্নত গোপালগঞ্জের কৃষির ব্যাপক উন্নতি ঘটছে। প্রকল্পের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কৃষি মন্ত্রনালয়ের অর্থায়নে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনষ্টিটিউটের সরেজমিন গবেষণা বিভাগের পিরোজপুর, গোপালগঞ্জ, বাগেরহাট সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প ৩ জেলায় ২০১৩ সাল থেকে কাজ শুরু করে। গোপালগঞ্জ শহরে এ প্রকল্পের প্রকল্প অফিস স্থাপন করে কার্যক্রম আরম্ভ করা হয়। গবেষণা কার্যক্রমের মাধ্যমে এলাকার উপযোগি ফসলের সম্ভাব্যতা চাই এবং কৃষক প্রশিক্ষণ, মাঠ দিবস, সেমিনার, কর্মশালার মাধ্যমে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনষ্টিটিউট উদ্ভাবিত উন্নত জাত ও প্রযুক্তির বিস্তার ঘটিয়ে কৃষকের আয় বৃদ্ধি করাই হচ্ছে এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য । প্রকল্পের উর্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এইচ.এম খায়রুল বসার বলেন, কৃষি গবেষণা ইনষ্টিটিউটের বিজ্ঞানী কতৃক উদ্ভাবিত নতুন নতুন জাতের বীজ এ প্রকল্পের গবেষকদের হাতে তুলে দেয়া হয়। এসব বীজের উপযোগিতা যাচাইয়ে জন্য কৃষককে পরামর্শ , প্রশিক্ষণ, সার ও ছত্রাক নাশক নিয়ে প্রদর্শনী প্লট করছি। প্রতিটি প্রদর্শনী প্লটে ফসলের বাম্পার ফলন হচ্ছে। সম্পাদনা: শাহীন আলম