ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাষার ব্যবহার বিকৃত হচ্ছে
উম্মুল ওয়ারা সুইটি: এখন তরুণ প্রজন্মের কাছে ভাবের আদান প্রদান হচ্ছে মোবাইল ইন্টারনেটের মাধ্যমে। একে অপরের সঙ্গে কথা বলা এবং নিজের মতামত প্রকাশ করার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যমে পরিণত হয়েছে ফেসবুক। এই ফেসবুকে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি বাংলা ভাষার বিকৃত ব্যবহার হচ্ছে।
ভাষাবিদ ও ইতিহাসবিদদের অভিমত, বর্তমান প্রজন্ম যেভাবে বাংলাকে ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করছে-তা দেশের জন্য মোটেই ভালো নয়। এর পরিণতি খুব খারাপ ইঙ্গিত করছে।
ইতিহাসবিদ ড. মুনতাসির মামুন বলেছেন, পরিবার ও সমাজের দায়িত্ব পরবর্তী প্রজন্মের কাছে নিজেদের ইতিহাস-ঐতিহ্য হস্তান্তর করা অবিকৃত অবস্থায়। কিন্তু আমরা সেটা পারছি না। যেখানে তথ্য প্রযুক্তির অবাধ ব্যবহারের মাধ্যমে নিজেদের ভাষার অর্জনকে বিশ্বব্যাপী তুলে ধরার কথা। আর আমরা যাচ্ছি উল্টো দিকে। এখনকার ছেলে-মেয়েরা বেশিরভাগ সময় ব্যস্ত থাকে মোবাইল ফোনে। এটি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এখানে ভাষার যাচ্ছে তাই ব্যবহার ঘটছে। এর কোনো মনিটরিং নাই। এই বিকৃতি রোধে আমাদের সচেতন থাকতে হবে। তিনি বলেন, আর কোনো জাতির ভাষা নিয়ে এমন গর্বের এবং রক্তক্ষরণ নেই। আমাদের ভাষা আন্দোলন হলো ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণা। এটা আজকের ছেলে-মেয়েদের জানাতে হবে। না হয়, হারিয়ে যাবে আমাদের এই ঐতিহ্য।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. চঞ্চল কুমার বোস বলেন, মাধ্যম যাই হোক ভাষার ব্যবহারে সঠিক প্রয়োগ থাকতে হবে। না হয়, এই প্রজন্মের কাছ থেকে শিশুরা আরও ভুল শিখবে। ফলে ভাষার ক্ষেত্রে একটা নৈরাজ্য ও অবক্ষয় আসবে। আমাদের ভাষাকে তার নিজস্ব সুরেই বাঁচিয়ে রাখতে হবে। আরও বড় বিষয় হলো, বাংলা ভাষা রক্ত দিয়ে অর্জন করা। এই ভাষার কারণেই আজ ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি পেয়েছে। তাই আমাদের দায়িত্ব আরও অনেক বেশি। এই ভাষাকে শুদ্ধভাবে বিশ্বের কাছে উপস্থাপন করতে হবে। তরুণ প্রজন্মকে শুদ্ধভাবে ভাষার ব্যবহারের দিকে মনোযোগী করতে হবে।