মাসুদ মিয়া: টানা ৬ দিন পর মাংস বিক্রি শুরু করেছে ব্যবসায়ীরা। সংবাদ সম্মেলন করে ধর্মঘট স্থগিতের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন ব্যবসায়ীরা। এখন গরু ও খাসির মাংস মিলছে রাজধানীর বাজারে। মাংস ব্যবসায়ীয়ের নিয়ম অনুসারে রোববার রাজধানীতে সাধারণত গরু জবাই হয় না। তার পরও বিশেষ বিবেচনায় গতকাল গরু ও খাসি জবাই করে মাংস বিক্রি হয়েছে।
এদিকে মাংস ব্যবসায়ীদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। চার দফা দাবিতে ৬দিন রাজধানীতে গরুর মাংস বিক্রি বন্ধ রেখে ধর্মঘট করেছিলেন ব্যবসায়ীরা। গতকাল রাজধানীর কয়েকটি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগের দামেই মাংস বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। তবে দাবি মানা না হলে শিগগিরই দেশব্যাপী ধর্মঘট পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা। এমনকি দাবি মানলে ৩০০ টাকা কেজি দরেও গরুর মাংস বিক্রি করা হতে পারে বলেও মন্তব্য করেছেন মাংস ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা।
বিক্রেতারা বলছেন, কয়েকদিন মাংস বিক্রি বন্ধ থাকায় আজ বিক্রি বেশি হচ্ছে। তবে চাঁদাবাজি না কমলে মাংসের দাম কমাতে কোনো ভূমিকা তারা রাখতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব রবিউল আলম। তিনি বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রী না থাকায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে মাংস ব্যবসায়ী সমিতির দাবিকে আশ্বাস দিয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রী ঢাকার বাইরে আছেন তিনি আসলে পদক্ষেপ নিবেন। মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, ব্যবসায়ীরা যে নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা বলেছেন সে বিষয়ে শিগগিরই পদক্ষেপ নেওয়া হবে। গতকাল সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি তার এই বক্তব্য সংবাদমাধ্যমের কাছে তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ভারতে যেখানে ১৬০ টাকায় গরুর মাংস এবং ২৫০ টাকায় খাসির মাংস পাওয়া যায়, সেখানে বাংলাদেশে ৫০০ ও ৮০০ টাকায় মাংস বিক্রি করেও পুঁজি বাঁচানো যাচ্ছে না। তিনি অভিযোগ করেন, ব্যবসায়ীরা গাবতলীতে যেতে পারছেন না। স্থানীয় সন্ত্রাসী কালা মইজা বাহিনী বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছে। সে যে কোনো সময় ব্যবসায়ীদের ওপর হামলা করতে পারে। এই অবস্থায় যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে তিনি সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন বলে জানান রবিউল আলম। রবিউল আলম বলেন, ক্রেতাদের গলাকেটে টাকা আদায় করতে আমাদের ইচ্ছে করে না। কিন্তু হুমকি ব্যবসায়ী, চাঁদাবাজ ও ইজারাদারদের কারণে আমাদের তা করতে হচ্ছে।
এসময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সফিউল হক বলেন, আমরা মাংস ব্যবসায়ী সমিতির দাবির সঙ্গে একমত। তারা বলছেন, কম টাকায় মাংস খাওয়াবেন। আমরাও চাই সাধারণ মানুষ কম টাকায় মাংস কিনতে পারেন। ব্যবসায়ীরা যে নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা বলেছেন সে বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ নেবো। বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি ছাড়াও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, গাবতলী পশুর হাটে অতিরিক্ত খাজনা আদায় বন্ধসহ চার দফা দাবিতে টানা ৬ দিনের ধর্মঘট ডেকেছিল বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতি ও ঢাকা মেট্রোপলিটন মাংস ব্যবসায়ী সমিতি। সম্পাদনা: এনামুল হক