আজাদ হোসেন সুমন: জঙ্গি তৎপরতা নেই বললেই চলে। পুলিশি তৎপরতায় জঙ্গিরা চলে গেছে আত্মগোপনে। অন্যদিকে চুপসে গেছে ব্লগাররাও। ফেসবুকসহ বিভিন্ন ব্লগে এখন আর ব্লগারদের তৎপরতা নেই।
মাস্টারমাইন্ড জঙ্গি মেজর জিয়া ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকলেও সে আত্মগোপনে চলে গেছে। তার পাশপাশি অন্যান্য জঙ্গিরাও নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে। পুলিশ রয়েছে জঙ্গিবিরোধী তৎপরতায়। বিশেষ করে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট জঙ্গিদের ব্যাপারে গবেষণা অব্যাহত রেখেছে। পুলিশ চারদিকে সোর্স নিয়োগ করে অনুসন্ধান অব্যাহত রেখেছে। পুলিশের এই তৎপরতার মুখে জঙ্গিরা এখন নিষ্ক্রিয়। তবে তারা ঘাপটি মেরে আছে বলে মনে করছেন অপরাধ বিশ্লেষকরা। তাদের মতে পুলিশের অব্যাহত অভিযান ও তৎপরতার কারণে জঙ্গিরা আত্মগোপনে গিয়ে ঘাপটি মেরেছে- তার অর্থ এই নয় যে তারা দমন বা নির্মূল হয়ে গেছে। এমনটা অবশ্য পুলিশ বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা মনে করছেন না। পুলিশের দায়িত্বশীল সূত্রগুলোর মতে, জঙ্গিরা এখন নিষ্ক্রিয় বলে উচ্ছ্বসিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। তারা এতটাই ভয়ঙ্কর- যেকোনো মূহূর্তে যেকোনো ঘটনা ঘটিয়ে দিতে পারে। পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা এ ব্যাপারে সজাগ আছে বলে তারা মনে করছেন। কারণ ৫ জন দুর্ধর্ষ জঙ্গিও ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকলে তারা বড় ধরনের নাশকতা ঘটিয়ে দিতে পারে। এদেরকে তৈরিই করা হয় সেভাবেই। প্রথমে তাদের ব্রেনওয়াশ করে তথাকথিত জেহাদে উদ্ধুদ্ধ করা হয়। এরপর ‘তাগুদ কতল’ করার দীক্ষা দেওয়া হয়। এদেরকে উদ্বুদ্ধ করার পর প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়ে সুইসাইডাল স্কোয়াড তৈরি করা হয়। সুইসাইডাল স্কোয়াডের সদস্যরা নিজের জীবনের বিনিময়ে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে।
ডিআইজি (মিডিয়া এন্ড প্লানিং) শহিদুর রহমান বলেন, জঙ্গিরা আত্মগোপনে থেকে ঘাপটি মেরে আছে। তাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। পুলিশ এ ব্যাপারে সদা তৎপর রয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন।
অন্যদিকে ফেসবুক, ব্লগসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্লগাররা এক সময় তৎপর হলেও এখন আর সে অবস্থা নেই। এরা এখন আর ধর্ম নিয়ে কটাক্ষ বা উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখা থেকে বিরত রয়েছেন। এ ব্যাপারে পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, এটা অবশ্য ভালো দিক। কারণ ব্লগাররা সমকালীন নানা বিষয়বস্তু নিয়ে লিখতেই পারেন। এ নিয়ে কারও কোনো মাথাব্যথার কারন হবে না। যখন অতি উৎসাহী কেউ কেউ বাড়াবাড়ি করেন- ধর্ম নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন তখনই সমস্যা দেখা দেয়। তিনি বলেন, এখন অবশ্য তেমন কোনো অভিযোগ নেই।
জানা গেছে, ২০১৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ব্লগার রাজিবকে জঙ্গিরা মিরপুরে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে। এরপর সাড়ে ৩ বছরে রাজধানীতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্র ও ব্লগার নাজিমুদ্দিন সামাদ, অভিজিৎ রায়, ওয়াশিকুর রহমান বাবু, নীলয় নীলসহ ১২ জন ব্লগারকে হত্যা করে। পুলিশ অবশ্য এসব হত্যাকা-ের তদন্ত করে হত্যাকারীদের আওতায় আনার চেষ্টা করছে। গতকাল রাজিব হত্যা মামলায় ফাঁসির দ-প্রাপ্ত এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সম্পাদনা: এনামুল হক