ভাষা ও মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের সঙ্গে বেইমানি করেছে বর্তমান শাসকগোষ্ঠী : মির্জা ফখরুল
শাহানুজ্জামান টিটু: বর্তমান শাসকগোষ্ঠী ভাষা আন্দোলনের চেতনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, তারা ভাষা আন্দোলনের শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করেছে। একই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করেছে।
গতকাল বিকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বিএনপি এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে রাষ্ট্রযন্ত্র, বন্দুক ও অস্ত্র ব্যবহার করে জনগণের ন্যায্য দাবিগুলো দাবিয়ে রেখেছে। বর্তমান শাসকগোষ্ঠী তারা বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর আশা-আকাক্সক্ষা সম্পূর্ণভাবে পদদলিত করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায়।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা আছেন, তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, ভাষা আন্দোলনের চেতনা এই কথাগুলো খুব ব্যবহার করেন। কিন্তু তারা একবারের জন্য বলেন না যে, ভাষা আন্দোলনের চেতনা ছিল মূলত গণতান্ত্রিক চেতনা ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধই ছিল গণতান্ত্রিক চেতনা। এই জায়গাগুলোতেই আজকের এই সংঘাত। আর বড় রকমের সংঘাত আদর্শের সংঘাত বলে মনে করি।
মির্জা ফখরুল বলেন, রাজনীতি যদি ভুল হয় এবং জনগণের ভাষা যদি শাসকগোষ্ঠী না বুঝতে পারে তাহলে যত জনপ্রিয়ই হোক না কেন তিনি অতি দ্রুত জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবেন। স্বতন্ত্র জাতিগোষ্ঠীর আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল ৫২-র ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। আর সেখান থেকে আমাদের স্বাধীনতা, আত্মপরিচয় ও মুক্তিযুদ্ধের আন্দোলন।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, মিথ্যা কথা বলে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধির একটি কল্পকাহিনী তৈরি করে দেশ ও বিশ্ববাসীকে বোঝানো হচ্ছে যে, বাংলাদেশ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে এবং এত প্রবৃদ্ধি আর কখনো হয়নি। কিন্তু ২০০২ থেকে ০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি যে প্রবৃদ্ধির হার রেখেছিল, সেখান থেকে একটুও বাড়াতে পারেনি আওয়ামী লীগ সরকার।
সরকার ছলচাতুরী করে জনগণকে ভোটাধিকার বঞ্চিত করতে চায় মন্তব্য করে এর বিরুদ্ধে শপথ নিতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান দলটির মহাসচিব।
সরকার আবারো একদলীয় নির্বাচন করতে চায় অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘পরিষ্কার করে বলতে চাই, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন এই দেশের মানুষ বর্জন করেছে, বিশ্বাবাসীও তা গ্রহণ করেনি। আজকে যদি আবার ছলচাতুরী করে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে একদলীয় নির্বাচন করতে চায়, এদেশের মানুষ ও বিশ্ববাসী তা গ্রহণ করবে না।
বিএনপি নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই একাদশতম জাতীয় নির্বাচন চায় জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা এই নির্বাচন দেখতে চাই একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে, সেটিকে যে নামেই চিহ্নিত করা হোক না কেন। সহায়ক সরকার বা অন্য যে নামেই বলি, তাকে সম্পূর্ণরূপে নিরপেক্ষ হতে হবে। সেই নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন পরিচালনা করবে, যাতে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও সকল দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন হয় এবং লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকে। অন্যথায় এদেশের মানুষ তা গ্রহণ করবে না। সম্পাদনা: এনামুল হক