মন্ত্রিসভায় জানতে চাইলেন প্রধানমন্ত্রী ট্যাক্স ফাঁকির অপরাধে ড. ইউনূসকে আইনত কী করা উচিত
আনিসুর রহমান তপন: ড. ইউনূস ট্যাক্স ফাঁকি দিয়েছেন। তো একজন ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়া লোককে আইনত কী করা উচিত। গতকাল সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ তথ্য জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে এ তথ্য জানাগেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক মন্ত্রিসভার সদস্য জানান, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ৫৩তম মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দেওয়া প্রসঙ্গে মন্ত্রিসভাকে অবহিত করছিলেন। এই সম্মেলনে যোগ দেয়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, সরকার প্রধান ও প্রতিনিধিদের সঙ্গে শেখ হাসিনার বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনায় ড. ইউনূস প্রসঙ্গটিও স্থান পায় বলে জানান তিনি।
এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বের অন্যতম একটি দেশের প্রতিনিধি শেখ হাসিনার সঙ্গে আলাপে ইউনূস প্রসঙ্গে প্রশ্ন তুলে বলেন, আমার বন্ধুকে আপনারা এত হ্যারাজ (বিব্রত) করছেন কেন? জবাবে প্রধানমন্ত্রী বিদেশি ঐ প্রতিনিধিকে জানান, তুমি যার সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করছ, সেত ট্যাক্স ফাঁকি দিয়েছে। সেত নিয়ম অনুযায়ী ট্যাক্স পরিশোধ করেন নাই। পাল্টা প্রশ্ন করে বিদেশি ঐ প্রতিনিধিকে প্রধানমন্ত্রী জিজ্ঞেস করেন, তোমার দেশের নিয়ম অনুযায়ী যদি তুমি নিজে যথাযথ ট্যাক্স পরিশোধ না কর, তবে আইনত তোমর কি হবে? জবাবে তিনি জানান, সাজা হবে। তখন শেখ হাসিনাও তাকে প্রশ্ন করে বলেন, তাহলে তোমার বন্ধুকে এই অপরাধের জন্য কি করা উচিত।
জার্মানীর চ্যান্সেলর এঙ্গেলা মেরকেল এর সঙ্গেও আলোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। মেরকেল এর সঙ্গে আলাপ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি আমার কাছে হাতিয়ার ঠেঙ্গারচরে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন প্রসঙ্গে জানতে চেয়েছেন। মেরকেল আমাকে জিজ্ঞেস করেছে, তোমরা যেখানে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন করছো সেই দ্বীপটি নাকি জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায়? আলোচনার এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি তাকে জানিয়েছি, রোহিঙ্গারা এখন যেখানে আছে সেটি আমার দেশ এবং আমার দেশের জায়গা। আর যেখানে তাদের পুনর্বাসন করতে যাচ্ছি সেটাও আমার দেশ এবং আমার দেশের জায়গা। তাদের শুধু এক স্থান থেকে অন্য স্থানে আরও ভালভাবে স্থানান্তরিত করছি। এতে অসুবিধা কোথায়? আর আমি তাকে আরও বলেছি তুমি তো বাংলাদেশের ওয়েদার (আবহাওয়া) সম্পর্কে জান। আমাদের ওখানে পূর্ণিমা এবং অমাবস্যার সময় নদীতে জোয়ার আসে। এতে বাংলাদেশের অধিকাংশ স্থানই পানিতে তলিয়ে যায়। তারপরও তো আমরা সেখানে আছি। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভাকে জানিয়েছেন, এঙ্গেলা মেরকেলকে তিনি আরও জানিয়েছেন, তোমরা যদি ওদের সাহায্য-সহযোগিতা করতে চাও তবে সেখানে তাদের বাড়ি-ঘর তৈরি করে দাও। তাদের খাবার ও চিকিৎসার ব্যবস্থা কর। তোমরা যতদিন ওদের সাহায্য করবে আমরাও ততদিন সেসব তাদের মধ্যে দিতে থাকবো।
মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের গার্মেন্ট ও এর শ্রমিকদের নিয়েও আলোচনা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী জানান, সেখানে বিদেশি প্রতিনিধিরা গার্মেন্ট সেক্টরের শ্রমিকদের বিভিন্ন অসুবিধা বিষয়ে জানতে চেয়েছে। জবাবে তাদেরকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশ থেকে যেসব শ্রমিক নামধারী নেতারা তোমাদের কাছে এসব অভিযোগ করে। তোমরা তাদের বিষয়ে খোঁজ নাও। প্রকৃত পক্ষে তারা কি করে, কোন গার্মেন্ট কারখানায় তারা কাজ করে। গার্মেন্ট সেক্টরে যারা নেতৃত্ব দেয়ার দাবি করে, যারা শ্রমিকদের বিভিন্ন অভাব-অভিযোগ সম্পর্কে তোমাদের বিভিন্ন রকম তথ্য দেয়, তারাতো আসলে শ্রমিক না। তারা শ্রমিকদের বাইরের পার্সন। সম্পাদনা: এনামুল হক