ট্রাফিক পুলিশের মামলা প্রাইভেট কারেই বেশি
ইসমাঈল হুসাইন ইমু: রাজধানীতে গতকাল ট্রাফিক পুলিশ আইন লঙ্ঘনের জন্য মামলা করেছে ৫৭৫টি গাড়ির বিরুদ্ধে। এরমধ্যে মাত্র ৩টি হলো বাস। বাকি সব গাড়িই হলো প্রাইভেট কার। প্রতিদিন বিভিন্ন রুটে চলমান বাস ট্রাফিক আইনে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চলাচল করছে তাদের দিকে দৃষ্টি নেই ট্রাফিকের। রাজধানীতে চলমান বিভিন্ন কোম্পানির বাসগুলোর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে অনেকটা উদাসীন ট্রাফিক পুলিশ। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগ।
পরিবহন সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর বিভিন্ন রুটে চলমান প্রায় সব বাসই চলে সার্জেন্টদের সাপ্তাহিক মাসোহারার ভিত্তিতে। ট্রাক কাভার্ড ভ্যান চলে মাসিক ভিত্তিতে। অনেক সার্জেন্ট রয়েছেন যারা একাধিক বাসের মালিক। আবার পরিবহন ব্যবসায়ীরা পুলিশি ঝামেলা এড়াতে অনেক সময় সার্জেন্টদের নামও ব্যবহার করে থাকেন। আর দূরপাল্লার বাসও চলে একইভাবে।
জানা গেছে, রাজধানীতে বাস নিয়ন্ত্রণকারী লাইনম্যানদের মাধ্যমেই টাকা লেনদেন হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন লাইনম্যান জানান, যে কোম্পানির বাস যে লাইনম্যানের আওতায় তিনিই সংশ্লিষ্ট এলাকার ট্রাফিক সার্জেন্টদের সাপ্তাহিক মাসোহারা দিয়ে থাকেন। প্রতি সপ্তাহে একজন সার্জেন্টকে ২শ টাকা আর টিআইকে দেওয়া হয় ১৫শ থেকে ২ হাজার টাকা। আর এসিদের বিষয়ে সমঝোতার ভিত্তিতে টাকা সরবরাহ করা হয়।
রাজধানীতে দিনে ট্রাক চলাচল নিষিদ্ধ হলেও অনেক সময় ট্রাফিক পুলিশকে ম্যানেজ করে ঢোকানো হয় ট্রাক ও বড় কাভার্ড ভ্যান। ওই লাইনম্যান জানান, গাবতলী, মহাখালী ও সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকায় যেসব ট্রাফিক পুলিশ দায়িত্বে থাকেন তারাই এই মাসোহারা পেয়ে থাকেন। তবে এসব বাসের বিরুদ্ধে যে মামলা হয় না তা নয়। প্রতিদিনই দু’একটি বাসের বিরুদ্ধে মামলা হয় বলে জানান তিনি।
মিরপুর রোডে মাসোহারার ভিত্তিতে চলে দিশারী পরিবহন, নিউ ভিশন, বিকল্প, বিহঙ্গ, শিকড়, চয়েস, ইউনাইটেডসহ আরও বেশকিছু বাস। এছাড়া উত্তরা রুটে ঢাকা পরিবহন, তুরাগ, ৩ নম্বর বাস, ১০ নম্বর
সিটিং সার্ভিস, সুপ্রভাত, অনাবিল, সালসাবিল। নারায়ণগঞ্জ রুটে লাব্বাইক, আশিয়ান, হিমাচল, ঠিকানা, উৎসব, বন্ধন, মেঘলা, দোয়েল। গুলশান রুটে বর্ণমালা, উইনার, তরঙ্গসহ আরও বেশকিছু বাস চলাচল করে। মোহাম্মদপুর রুটে গ্যালাক্সি, স্বপ্ন, অভিলাষ, মক্কা, সিটি চয়েস, দীপন, এটিসিএল, শতাব্দী।
এদিকে, ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, রোববার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১৮ লাখ ৪৯ হাজার ৮৫০ টাকা জরিমানা ও ৪ হাজার ২৯৬টি মামলা করা হয়েছে। এ সময় ৭৭টি গাড়ি ডাম্পিং ও ৫৯২টি গাড়ি রেকারও করা হয়। হাইড্রোলিক হর্ণ, হুটার বেকন লাইট, উল্টোপথে চলাচল ও কালো গ্লাস ব্যবহার করার কারণে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ট্রাফিক দক্ষিণ বিভাগের সহকারী কমিশনার সিফাত ই রাব্বান বলেন, বাসের বিরুদ্ধে মামলা করা হয় না এটা ঠিক নয়। আজও (গতকাল) তিনটি বাসের কাগজপত্র না থাকায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পাশাপাশি অনেক লেগুনা রয়েছে যেসবের কাগজ নেই, ওইসব লেগুনার বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বাস সার্জেন্টদের সঙ্গে চুক্তিতে চলে এটা তার জানা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ডিএমপির সকল ট্রাফিক বিভাগকে একই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সদর দফতর থেকে। সে অনুযায়ী চারটি বিভাগের কর্মকর্তার্ াশুধু প্রাইভেট কার বা বাইক নয় সকল ত্রুটিপূর্ণ যানবাহনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে। সম্পাদনা: এনামুল হক