অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কূটনীতিকদের সঙ্গে আলোচনা করতে চান না রাষ্ট্রপতি
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী: বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডাসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনাররা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চান। তারা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠক করে রাজনৈতিক সংকটের সমাধান ও আগামীতে কেমন নির্বাচন দেখতে চান এই বিষয়ে রাষ্ট্রপতিকে বলতে চান। আগামী দিনে যেন রাষ্ট্রপতি সেইভাবে রাজনৈতিক সংকট নিরসনের জন্য উদ্যোগ নেন সেটাও বলতে চান। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তারা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করার উদ্যোগ নিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কূটনীতিকদের দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কথা বলার সুযোগ দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে বঙ্গভবনের একটি সূত্র। বঙ্গভবনের ওই সূত্র জানায়, রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের প্রধান। প্রটোকলের ব্যাপার রয়েছে। তার সঙ্গে বিদেশি কূটনীতিকরা বিশেষ করে হাইকমিশনার ও রাষ্ট্রদূতরা আসার পর পরিচয়পত্র পেশ ও যাওয়ার সময়ে দেখা করার সুযোগ পান। এছাড়াও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাদেরকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তখন তারা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করার ও কথা বলার সুযোগ পান। কিন্তু সেখানে সৌজন্য সাক্ষাৎ ছাড়া তেমন কোনো বিষয়ে কথা বলার সুযোগ থাকে না।
বিদেশিরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কখন কোন পরিস্থিতিতে দেখা করতে পারেন সেটাও নির্ধারিত আছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করার জন্য ও দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য কূটনীতিকদের তরফ থেকে সময় চাওয়া হয়েছে। এই ব্যাপারে সময় দেওয়া হচ্ছে কি না জানতে চাইলে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদনী বলেন, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে চাইলেই তারা এই বিষয়ে কথা বলতে পারেন না। এখানে প্রটোকলের ব্যাপার আছে। তা ছাড়াও এই প্রটোকলের বিষয়টি দেখবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিয়ে এরপর তাদেরকে জানাবেন। তা ছাড়া অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশিদের সঙ্গে রাষ্ট্রের প্রধান ব্যক্তি ওইভাবে কথাও বলতে পারেন না। রাজনৈতিক সংকট রাজনৈতিকভাবেই সমাধান করা হবে। রাজনৈতিক দলগুলো ও সরকার এই ব্যাপারে উদ্যোগ নিবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র আরও জানায়, রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারদের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা হয়েছে। এই বিষয়ে তারা কথা বলতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে কথা বলতে পারেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে পারেন। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কথা বলার আপাতত কোনো প্রয়োজন তারা অনুভব করছে না। এই কারণে বিদেশিরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে রাজনৈতিক সংকট সমাধানের বিষয়ে কথা বলার সুযোগ পাচ্ছে না।
সরকারের একজন নীতি নির্ধারক মন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের সমস্যা আমরাই সমাধান করবো। সেখানে কূটনীতিকদের সঙ্গে আলোচনা করলে লাভ হবে না। কারণ দেশের ভেতরকার বিষয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলাও সরকার প্রয়োজন মনে করছে না। কারণ দেশে এখন তেমন কোনো সংকট নেই। তারা যদি বিএনপির গত নির্বাচনে অংশ না নেওয়া এবং আগামী দিনে বিএনপি নির্বাচনে যাতে অংশ নেয় সেটা নিশ্চিত করার জন্য চেষ্টা করে সেটা সম্ভব হবে না। কারণ নির্বাচন যথাসময়ে হবে। এই সরকারের অধীনে হবে। নির্বাচন কমিশন সব দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নিবে। সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার ব্যবস্থা করবে। সম্পাদনা: এনামুল হক