বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তি তানভীর সিদ্দিকীর ছেলে ইরাদ বিমানবন্দরে গ্রেফতারের পর ৪ দিনের রিমান্ডে
মাসুদ আলম ও মামুন খান: তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে দায়ের করা মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য তানভীর আহমেদ সিদ্দিকীর ছেলে চৌধুরী ইরাদ আহমেদ সিদ্দিকীকে চার দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকা সিএমএম আদালতে হাজির করে রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় তথ্য প্রযুক্তি আইনে দায়ের করা মামলায় সুষ্ঠু তদন্তের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম খুরশীদ আলম চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ফেসবুকে বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান সরকারকে নিয়ে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ ও অশ্লীল মন্তব্য করায় বৃহস্পতিবার ভোরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইরাদকে গ্রেফতার করে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে ইরাদের বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারের ডিসি মাসুদুর রহমান বলেন, ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে ইরাদ আহম্মদ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে। এর মধ্যে কয়েকটি মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করেছে আদালত। কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সাইবার নিরাপত্তা ও অপরাধ দমন বিভাগের সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং টিম ফেসবুক আইডি ও তাকে গ্রেফতারে গোয়েন্দা তৎপরতার বাড়ায়। ভোরে তুরস্কে যাওয়ার জন্য বিমানবন্দরে আসলে ইরাদকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে সিম, মোবাইল, ম্যাক বুক ও ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইরাদ জানান, তিনি নেদারল্যান্ডসে থাকেন। ইরাদ বিভিন্ন সময় মেয়র চৌধুরী ইরাদ আহমেদ সিদ্দিকী, জমিদার চৌধুরী ইরাদ আহমেদ সিদ্দিকী ও ইরাদবেরী ফিন নামে ফেসবুক আইডি খুলে বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান সরকারকে নিয়ে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ ও অশ্লীল মন্তব্য করেন। তার ফেসবুক পোস্টে রাষ্ট্রবিরোধী মন্তব্য রয়েছে। এ ছাড়া তিনি নিজেকে ঢাকার ছায়া মেয়র বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুলে ধরেন। ফেসবুক মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে ইরাদ সিদ্দিকী তার ফেসবুক আইডিতে স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেন “শেখ হাসিনাকে গুপ্তহত্যা সম্ভব নয় । কারণ শেখ হাসিনার চারিদিকে ভারতে বিশেষ নিরাপত্তার চাদর রয়েছে। ভারতীয়রা সরাসরি শেখ হাসিনার নিরাপত্তার বিধান করছে। কারণ শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ভারতের স্বার্থেরই প্রতিনিধিত্ব করছেন। শেখ হাসিনাকে গুপ্তহত্যা ছাড়া বাংলাদেশে ভারসাম্য ও গণতন্ত্র ফেরানো সম্ভব নয়।”
একইদিন রাতে আরেকটি স্ট্যাটাসে একটি ছবি পোস্ট করেন। সেখানে একটি ঘোড়ার তৈরি চিত্রের ছবি পোস্ট দিয়ে বঙ্গবন্ধুর পিতাকে বলিয়াদির জমিদারের ঘোড়ার ভৃত্য বলে উল্লেখ করেন। এছাড়া গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে আরেকটি স্ট্যাটাসে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবির নিচে এক মধ্যম আঙ্গুলি প্রদর্শন করে ট্রল করে পোস্ট দেন। সেখানে তিনি লিখেন, “ভাস্কর্য হাজারো শর্বের প্রতিনিধিত্ব করে।”
ওই অভিযোগে গত বছর অক্টোবর মাসে রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় মামলাটি করা হয়। এছাড়া একই অভিযোগে ঢাকা সিএমএম আদালতে ২টি এবং গাজীপুর ও বগুড়ায় একটি করে মামলা হয়।
আইডিগুলো জব্দ করা হয়েছে।
সম্পাদনা: নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী