ইতিবাচকভাবে নিচেছ না বিএনপি গোপালগঞ্জে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানালো সিইসি ও চার কমিশনার
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী ও শাহানুজ্জামান টিটু: প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও চার কমিশনার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্য নির্বাচন কমিশনাররা এই শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন। বিএনপি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনারদের টুঙ্গিপাড়ায় যাওয়া ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপণের বিষয়টি রাজনৈতিক বলেই মনে করছে। সেই সঙ্গে তারা এটাও মনে করছেন এবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনররা নিরপেক্ষতা ভঙ্গ করেছেন। এই কমিশন সুষ্ঠু, অবাধ, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে সক্ষম হবেন এমন আশা করছে না। আস্থাও রাখতে পারছে না।
এদিকে বঙ্গবন্ধুর সমাধিস্থলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অপর কমিশনারদের সঙ্গে নিয়ে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করেন। পরে সেখানে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর কবর জিয়ারত, ফাতেহা পাঠ ও মোনাজাত করেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বঙ্গবন্ধু ভবনে যান, সেখানে পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, বিগ্রেডিয়ার জেনারেল শাহাদাত হোসেন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোকলেসুর রহমান সরকার এ সময় উপস্থিত ছিলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনারা শ্রদ্ধাজ্ঞাপন শেষে সমাধি সৌধ কমপ্লেক্সে লাইব্রেরীসহ বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা এরপর সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে পরিবেশ ও ক্ষেত্র সৃষ্টি করা হবে। সব দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় সে বিষয়ে কমিশন কাজ করছে। তিনি আরও বলেন, আজ কোনো প্রশ্নের উত্তর দেব না। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টুঙ্গীপাড়ায় পবিত্র মাটিতে শায়িত আছেন। আমরা তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এখানে এসেছি।
নির্বাচন কশিমশন গঠনের পর এই প্রথম কোন নির্বাচন কমিশনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনাররা এক সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করলেন এবং টুঙ্গিপাড়ায় গেলেন। বিএনপি এটাকে ইতিবাচকভাবে নেয়নি। বিএনপির একাধিক নেতা বলেন, যেখানে আমরা সিইসির ভুমিকা নিয়ে আগেই প্রশ্ন তুলেছি। তিনি নিরপেক্ষ নন। তিনি আওয়ামী লীগের মানুষ। তারাও বলা হয়েছে। আমরা এতদিন অভিযোগ করে আসছিলাম। এবার সিইসি নিজেই প্রমাণ করলেন তিনি আওয়ামী লীগের। এই কারণেই তিনি সবাইকে নিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে ফুল দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা থাকলো না বলেও বিএনপি মনে করছে। এনিয়ে বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিক্রিয়াও জানাবে বলে নেতারা বলেছেন।
তবে দলটির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহাজাহান বলেন, কবর জিয়ারত করা কারো কারো ব্যক্তিগক বিষয় থাকতে পারে বা কারোর প্রতি দুর্বলতা থেকেও এটা করতে পারেন। কিন্তু উনারা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আছে আবার ইতিমধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে, উনার দলীয় পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন আছে এবং আমাদের পক্ষ থেকে ও আমাদের বাইরে যারা রয়েছেন তাদেরও পক্ষ থেকে তাকে নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। উনি ১৯৯৬ সালে আন্দোলন চলে তখন জনতার মঞ্চের সঙ্গে সম্পৃক্ততা ছিল্।ো তৎকালিন প্রধানমন্ত্রী ছবি নামানো নিয়ে প্রশ্ন আছে। অর্থ্যাৎ প্রধান নির্বাচন কমিশনার অতিতে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন এবং একটা দলের প্রতি উনার আনুগত্য আছে। সিইসি নিয়োগ পাওয়ারপর উনার এলাকায় াাওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ওনাকে ফুল দিয়েছেন মিষ্টিমুখ করিয়েছেন। তিনি বলেন, সিইসির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, তার অধিনে অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে সেখানেও প্রশ্ন রয়েছে। ঠিক এরকম একটা পরিস্থিতিতে তাকে নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠাটা স্বাভাবিক। আমার মনে হয় উনার দায়িত্ববোধ থেকে বিষয়টি বিবেচনা করলে হয়তবা আমাদেরকে এসব কথা বলতে হতো না। এরমাধ্যমে এটা প্রমাণিত হয় উনি যে একটা দলীয় পরিচয় বহন করেন, সেটা আরো পাকাপোক্ত করা হলো। এরমাধ্যমে তিনি প্রমাণ করলে আসলে তিনি একজন দলীয় কর্মী, দলীয় রাজনীতি করি এবং একটা দলের আর্দশের সাথে ওতোপ্রতোভাবে জড়িত। এদেশের সাধারণ মানুষ এটাকে দলীয় আনুগত্য হিসেবে দেখবে। দলীয় আনুগত্য প্রদশন করা যে মুর্হুতে উনাকে নিয়ে প্রশ্ন, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন। দেশ ও দেশের বাইরে সকল মহল উন্মুখ হয়ে তাকিয়ে রয়েছে সেই মুর্হুতে সিইসির দায়িত্ব নিয়ে একাজটা করা ঠিক হয়নি। আরো সর্তকতা অবলন্বন করার দরকার ছিলো।
এদিকে দলটির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, বঙ্গবুন্ধুর মাজারে উনারা গেছেন এটা উনাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব না। উনারা গেছেন আওয়ামী লীগ প্রতি সিইসির প্রীতি আছে একারণে। ওখানে উনারা গিয়েছেন ভালো। শেখ মুজিবকে আমরা জাতীয় নেতা হিসেবে শ্রদ্ধা করি। কিন্তু আমরা প্রত্যাশা করি উনারা শেরে বাংলা একে ফজলুল হক, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ও শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানে সমাধিস্থলে যাক তাহলে আমরা আরো খুশি হবো। তাহলে আমরা বুঝবো এদিক থেকে তারা নিরপেক্ষ চরিত্রটা বজায় রেখেছেন। সম্পাদনা:রাশিদ