আক্কেলপুরে ঝুঁকির মুখে রেললাইন
সফিউল আলম সফি: আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) : গুরুত্বপূর্ণ জয়েন্টের নাট বল্টুসহ অকেজো স্লিপার, রেললাইন ঠিক রাখতে লোহার পরিবর্তে কাঠের টুকরো, লাইনের উপর বাজার ও অবাধ চলাফেরা, অবাধে চুরি হচ্ছে যন্ত্রাংশ।আক্কেলপুরে রেললাইনের ফেসিং ও ট্রেনিং জয়েন্ট পয়েন্টের নাট বল্টুসহ কাঠের অনেক স্লিপার অকেজো, লোহার পরিবর্তে কাঠের খিল ব্যবহার, অনেক স্থানে খিল ছাড়া রেল। যে কোন সময় বড় ধরণের দুর্র্ঘটনার সম্ভাবনা। অবাধে চুরি হচ্ছে রেল লাইনের যত্রাংশ, পাথর, প্লাট ফরমসহ রেললাইনের উপর বাজার, প্লাটফরমের উপর দিয়ে যানবাহন ও পথচারীদের চলাচল, অবৈধ দোকান পাঠ মানুষের সচেতনতা ও কর্তৃপক্ষের তদারকির অভাবে দিন দিন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠেছে রেল লাইন।
সরজমিনে দেখা গেছে, জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলায় ৪টি রেল স্টেশন। এর মধ্যে আক্কেলপুর স্টেশনে প্রতিদিন প্রায় ২০টি ট্রেন যাত্রা বিরতি করে। আক্কেলপুর উপজেলার ৪টি রেল স্টেশনের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ১৯ টি রেলক্রসিং রয়েছে। এর মধ্যে অরক্ষিত ১৬টি। এসব রেল গেটে নেই গেট ম্যান। সবচেয়ে আক্কেলপুর মহিলা কলেজ রেল গেট ও তিলকপুর বাজার রেল গেট কয়েক দফায় শতাধিক মানুষের জীবন প্রদীপ নিভে দিয়েছে এ দুই ক্রসিংয়ে। এ ছাড়া প্রায় ২৯/২৫ কিলোমিটার দুরত্বের রেল লাইনের বিভিন্ন স্থানে বিশেষ করে রেল স্টেশনের উভয় পার্শ্বের ফেসিং ও ট্রেনিং পয়েন্টের স্থান সমুহে অনেক স্লিপারে নেই ক্লিপ ও নাট বল্টু। যা রাতের আঁধারে খুলে নিয়ে গেছে অসৎ ব্যক্তিরা। অনেক জায়গায় বহু দিনের পুরাতন নাট বল্টু রোদ বৃষ্টিতে থেকে থেকে তার কার্যক্ষমতা হারিয়ে শুধুই চিহ্ন হিসেবে জানান দিচ্ছে। কয়েক জায়গায় সংম্লিষ্ট ব্যক্তিরা রেল লাইন রক্ষায় লোহার খিলের পরিবর্তে কাঠের টুকরা ব্যহার করেছেন। এ ছাড়া তিলকপুর রেল লাইনের উপর বিভিন্ন পণ্যের বাজার ছাড়াও রেলওয়ে প্লাটফরমের উপর সব ধরনের মালামাল সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কেনা বেচার কাজ চলছে। আক্কেলপুর প্লাটফরমের উপর অনেক সময় প্রভাবশালীরা ধান শুকানোসহ ব্যক্তিগত কাজকর্ম পরিচালনা করে থাকেন।
এ ছাড়া আক্কেলপুর রেল স্টেশনের উত্তরের প্রধান রেল গেটের ট্রেন ক্রসিং পয়েন্টে লাইনের উপর বসে দোকান পাট। এরা ট্রেনের শব্দ ও আলো দেখে এবং শুনে তারাহুড়া মালামাল সরিয়ে নেই। এ ছাড়া অবৈধ দোকানের জন্য পয়েন্ট পরিবর্তন কাজের জন্য রেলের গুরুত্বপূর্ণ ঘর থেকে পয়েন্ট সমূহ দেখা যায় না। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে রেললাইন ঘুরে দেখা যায়, ষ্টেশন থেকে নিয়ন্ত্রিত সিগনাল ব্যবস্থা তারের উপরে লোকজনের বাসা বাড়ি, দোকান পাটের উচ্ছিষ্ট ফেলার কারণে ট্রেন চলাচলে বাধাগ্রস্থ হয়। তিলকপুর রেলওয়ে প্লাট ফরমের উপর ও রেল লাইনের উপর বসে প্রতিদিন হাট ও বাজার। এ সব এলাকায় রেললাইনের পাথর সরে গিয়ে মাটি বেরিয়ে পড়েছে। রেললাইন ঘেঁষে গড়ে উঠেছে অবৈধ দোকানপাট। কয়েকটি জায়গায় ছাপরা ঘরে সাজানো রয়েছে কেরাম বোর্ড, দিন-রাত সেখানে লোকজনের জটলা লেগেই থাকে। পাশাপাশি বেশ কয়েকটি জায়গায় চায়ের দোকান বসায় লোকজন লাইনের উপর দাঁড়িয়ে ও বসে চা পান করে থাকেন।
রেললাইনে সর্বসাধারণের হাঁটাচলা বা অবস্থান আইন অনুযায়ী দন্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু সে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে রেললাইন ঘিরে বাজার, প্রাল্টফরমের উপর দিয়ে মটর সাইকেল ম সাইকেল ভ্যান চালিয়ে যাওয়ার প্রবণতা যেন নিয়মে পরিনত হয়েছে। অপরিকল্পিত দোকান ঘড় গড়ে ওঠায় এ আইন ভুলতে বসেছে সাধারণ মানুষ। শুধু তাই নয়, যত্রতত্র তৈরি হচ্ছে অবৈধ রেলক্রসিং। ফলে দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ঘটছে অহরহ। এ বিষয়ে রেলওয়ে বিভাগ জনসাধারণকে সচেতন করতে গণসচেতনতা সৃষ্টি করে এ সব প্রতিরোধ করতে পারেন। এ সব বিষয়ে আক্কেলপুর ষ্টেশন মাষ্টার খাদিজা বেগমের নিকট জানাতে চাইলে তিনি আমাদের অর্থনীতিকে জানান, আমি স্টেশন মাষ্টার, রেল লাইন রক্ষনা বেক্ষন বিষয়ে আমার কোন দায়িত্ব নেই, এ বিষয়ে রেলের পি ডব্লিউ ভালো বলতে পারবেন।