কিরণ সেখ: জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জাতীয়তাবাদী শক্তি, দেশ ও জাতীয় ঐক্যের স্বার্থে এক এগারোর সময় সংস্কারপন্থি হিসাবে পরিচয়ে দলের বাইয়ে থাকা নেতাদের আবারও দলে টানছেন খালেদা জিয়া। গতকাল রাত ১২টায় চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের দুই সংস্কারপন্থি নেতাকে ডেকে এসব কথা বলেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম জিয়া।
পর্যায়ক্রমে সংস্কারপন্থি আরো বেশ কয়েক জন নেতাকে বিএনপি চেয়ারপারসন ডাকবেন বলে বৈঠক সূত্র জানায়। বৃহস্পতিবার বৈঠকে উপস্থিত দু’জন নেতা হলেন, বিএনপির সাবেক তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন এবং সাবেক সংসদ সদস্য সর্দার সাখাওয়াত হোসেন বকুল। এছাড়া বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহাজাহান উপস্থিত ছিলেন।
২০০৭ সালে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর দেশের বৃহৎ দুটি রাজনৈতিক দলে ‘আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’ ভাঙন ধরেছিল। ওই দলের একাংশ সংস্কার প্রস্তাবে আওয়ামী লীগ থেকে শেখ হাসিনাকে এবং বিএনপি থেকে খালেদা জিয়াকে বাদ দেওয়ার ষড়যন্ত্র করেছিল। সে সময় সেনাসমর্থিত সরকারের কাছে দুই নেত্রী কারাবন্দী হন। পরে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে দুই নেত্রীই সংস্কারপন্থি নেতাদের দল থেকে বহিষ্কার করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, খুব ভালো বৈঠক হয়েছে। ম্যাডাম আমাদের সঙ্গে খুব আন্তরিক ছিলেন। তিনি বলেন, অতীতের সকল ভুল-ভ্রান্তি ভুলে জাতীয়তাবাদী শক্তি ও জাতীয় স্বার্থে নতুন করে কাজ শুরু করতে হবে। কারণ এটা জাতীয় ঐক্যের বিষয়।
দলে কাজ করার জন্য আপনাদের কোনো দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কী- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখনও কোনো দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।
বৈঠকে উপস্থিত অপর নেতা সর্দার সাখাওয়াত হোসেন বকুল বলেন, খালেদা জিয়া তাদের অতীতের সকল কথা মনে না রেখে জাতীয়তাবাদী শক্তির স্বার্থে কাজ করতে বলেছেন। প্রায় আধা ঘণ্টা কথায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আবার দলের কাজে সক্রিয় হতে বলেছেন। পর্যায়ক্রমে আরও বেশ কয়েকজন সংস্কারপন্থি নেতাকে খালেদা জিয়া ডেকে পাঠাবেন বলে জানান তিনি।
দলে তার কাজের দায়িত্ব বিষয়ে জানতে চাইলে বকুল বলেন, বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করে কাজ করতে বলেছেন।
দলে আবার সক্রিয় হবেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে এই দু’ নেতা বলেছেন, ইচ্ছা থাকলেও এতোদিন তারা বিএনপিতে সক্রিয় হতে পারেননি। তবে খালেদা জিয়া ডেকে দলের কাজ করতে বলেছেন। সুতরাং তারা দলে আগের মতোই সক্রিয় হবেন।
প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালের বিএনপির মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়া একটি সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তার সঙ্গে দলের যেসব নেতা সক্রিয় ছিলেন তারা পরিচিতি পেয়েছিলেন সংস্কারপন্থি হিসেবে। ওই সময় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মান্নান ভূঁইয়াসহ কয়েকজনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছিলেন। তবে সংস্কারপন্থি হিসেবে পরিচিত বেশ কয়েকজন নেতাকে এর আগেই দলে টেনেছে বিএনপি। সম্পাদনা: এনামুল হক