ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মিষ্টান্ন ঐতিহ্য ধ্বংসের পথে
তৌহিদুর রহমান নিটল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় সুস্বাদু মিষ্টির ঐতিহ্য রয়েছে প্রায় অর্ধশত বছর ধরে এর সুনাম ও খ্যাতি রয়েছে সারা দেশব্যাপী। এখানকার খাঁটি গরু দুধের তৈরি মিষ্টি সব শ্রেণির ভোক্তাদের কাছে সমাদৃত। কিন্তু বিগত কয়েক বছর যাবৎত আমাদের মিষ্টির স্বাদ ও তৈরি উপকরণ নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা সমস্যা। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী পাইকারদের কাছ থেকে নিম্নমানের ছানা কিনে তৈরি করছে বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি। সম্প্রতি সরেজমিনে মহাদেব পট্টি ও সিনেমা হল রোডে ঘুরে দেখা যায়, নামী-দামী কিছু দোকান অন্যদের মত তারাও বাজার থেকে নিম্নমানের ছানা কিনে দোকানের ফ্রিজে ভরে রেখেছে। দোকানে উপস্থিত ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে তাদের দোকানের গ্যাসের চুলায় ৫০/৬০ কেজি গরুর দুধ জাল দিচ্ছে। ক্রেতারা যেন মনে করেন তাদের সামনে চুলায় থাকা গরুর দুধ দিয়ে উৎকৃষ্ট মানের ছানা তৈরী করা হয়। কিন্তু পর্দার আরালে অন্য রকম কারসাজি। প্রত্যেক বড় দোকান গুলোতে প্রতিদিন প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০কেজি মিষ্টি গড়ে বিক্রি হচ্ছে। মিষ্টি তৈরির প্রধান উপকরণই হচ্ছে ছানা। আর সে ছানাতো অর্ধেকও তাদের গড়ে গরুর খাটিঁ দুধ থেকে তৈরি হচ্ছে না তাদের দোকানের বাকি ছানাগুলো আসছে কোথায় থেকে এরকম প্রশ্ন অনেক ক্রেতার মনে ? বাজারে থাকা নিম্নমানের পাউডার গুড়ো দুধ কিনে গ্রামের বাড়িতে কৌশলে পাইকাররা তৈরি করছে ছানা আর সে ছানাই শহরের নামী-দামি দোকানগুলোসহ অনেক মিষ্টি দোকান এনে বিক্রি করছে পাইকাররা । আর সেসব নিম্নমানের ছানা দিয়েই তৈরি হচ্ছে সুস্বাদু বিভিন্ন ধরণের লোভনীয় আকৃতির মিষ্টি। যা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে দাড়িঁয়েছে। প্রতিকেজি মিষ্টি ১৫০টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ছানামুখি প্রতিকেজি ৫৫০টাকা ধরে বিক্রি হচ্ছে। মানের কোনরকম বালাই ছাড়া চলছে মিষ্টি দোকানগুলো। আবার প্রায় দোকানে মিষ্টির সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য মিষ্টিতে ছিটিয়ে দেওয়া হচ্চে নিম্নমানের পাউডার গুড়োঁ দুধ দেওয়া হচ্ছে । যা সম্পূর্ণ অস্বাস্থ্যকর। এছাড়া বাজারে দাম নিয়েও অরাজকতার অভিাযোগ করেছেন সাধারণ ক্রেতারা। মিষ্টি ক্রেতা জাহাঙ্গীর মিয়া, মজিবুর ভূইয়া, ও রোকসানা বেগম বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মিষ্টি একসময় সারা দেশে খ্যাতি ছিল। আমরা কোথাও বেড়াতে গেলে আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তৈরি মিষ্টি নিয়ে যেতাম। কিন্তু এখন আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মিষ্টির ঐতিহ্য পুরোটাই ধংসের পথে। নিম্নমানের পাউডার দুধ দিয়ে ছানা তৈরি করা হচ্ছে আর সে ছানা দিয়ে তৈরি হচ্ছে মিষ্টি। যা মিষ্টির গুণাবলী ও জন স্বাস্থ্যের জন্য বিরাট হুমকি হয়ে দাড়িঁয়েছে। তারা আরও অভিযোগ করেন, আবার বাজারে দোকানদাররা যেরকম পারছে দাম রাখছে। এক দোকানে যে মিষ্টি ১৫০টাকা বিক্রি হচ্ছে তা আবার অন্য দোকানে ১৮০টাকা বিক্রি হচ্ছে, ২০০টাকার মিষ্টি বেকারি জাতীয় দোকানগুলো বিক্রি হচ্ছে ২৮০/৩০০ টাকায় কেজিতে। যেভাবে পারছে দাম রাখছে। এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক দোকানদার বলেছেন, আমরা কাস্টমারদের মিষ্টি বিক্রির কোন ক্যাশ মেমো দিতে পারছি না। কারণ ক্যাশ মেমো দিতে গেলে বিক্রির মালের ওপর ভ্যাট দিতে হবে। সম্পাদনা : মুরাদ হাসান