মসজিদে নববির আদলে বাংলাদেশে বৈদ্যুতিক গম্বুজের মসজিদ
ওমর শাহ
সুইচ অন করলেই সরে যাবে মসজিদের গম্বুজ। ভেতর থেকেই দেখা যাবে পুরো আকাশ। আল্লাহর অপরূপ সৃষ্টি নীলাকাশের সৌন্দর্য্য মুগ্ধ করবে মুসল্লিদের। এমনই দৃষ্টিনন্দন ও অত্যাধুনিক সেবা বিশিষ্ট মসজিদ উদ্বোধন হতে যাচ্ছে মংমনসিংহ জেলার চরখরিচা গ্রামে। আজ শুক্রবার জুমার নামাজের মাধ্যমে মসজিদটি উদ্বোধন করবেন দেশের অন্যতম শীর্ষ আলেমে দীন, গুলশান আজাদ মসজিদের খতিব, মজলিসে দাওয়াতুল হকের আমির আল্লামা মাহমুদুল হাসান। এ উপলক্ষে মাহফিল ও ইজতেমার আয়োজন করা হয়েছে। যাতে কয়েক লাখ মানুষ সমাগম হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মনোরম সাজ ও দৃষ্টিনন্দন এ মসজিদটির নাম রাখা হয়েছে মদিনা মসজিদ। এটি ময়মনসিংহ জেলার চরসিরতা ইউনিয়নের চরখরিচা গ্রামের সবুজ ছায়াঘেরা পরিবেশে নির্মিত হয়েছে। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অনন্য সংযোজন বলে মনে করা হচ্ছে। মসজিদটি মসজিদে নববির আদলে তৈরি। দূর থেকে দেখলে সহজেই মানুষের দৃষ্টি কাড়বে। বৈদ্যুতিক গম্বুজবিশিষ্ট এলাকাবাসীর ধারণা সৌন্দর্য ও নান্দনিকতায় মসজিদটি ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নেবে সহজেই।
২০১১ সালে মসজিদটির নির্মাণ শুরু হয়। চার তলা বিশিষ্ট ১৯৭০৬ স্কয়ার ফিট জায়গার মসজিদটির কাতার সংখ্যা ১৯। প্রতিটি কাতারে মানুষ ধরবে ১১০ জন। মসজিদের পাঁচটি গম্বুজ রয়েছে। চারটি স্থির এবং একটি বৈদ্যুতিক গম্বুজ। সুউচ্চ মিনার রয়েছে দুটি। যার উচ্চতা চারতলার উপর থেকে ১৬০ ফিট। মসজিদটির পুরো কাজ হয়েছে মারবেল পাথরে এবং কাঠ আনা হয়েছে মিয়ানমার থেকে।
মুসল্লিদের উঠানামার জন্য একটি চলন্তসহ মোট পাঁচটি সিঁড়ি রয়েছে। ছোটবড় মিলিয়ে মোট ছয়টি দরজা রয়েছে। বিশাল আয়তনের দৃষ্টিনন্দন মসজিদটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ২০০ কোটি টাকা। জানা যায়, শুক্রবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেশের শীর্ষস্থানীয় উলামায়ে কেরাম উপস্থিত থাকবেন। তারা ধারণা করছেন অনুষ্ঠানে দুই লক্ষাধিক ধর্মপ্রাণ মুসল্লি এতে অংশ নেবেন। ৬০ হাজার লোকের খাবারের আয়োজন করা হচ্ছে বলেও জানা গেছে।
অনন্য দৃষ্টিনন্দন মসজিদটির উদ্যোক্তা মজলিসে দাওয়াতুল হকের আমির, জামিয়া মাদানিয়া যাত্রাবাড়ী মাদরাসার মুহতামিম মুহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমুদুল হাসান। তার জন্মস্থান চরখরিচার নিজবাড়ির সামনেই গড়ে উঠছে মসজিদটি। মসজিদটি নিয়ে আল্লামা মাহমুদুল হাসান বলেন, মসজিদ মহান রাব্বুল আলামিনের ঘর। আমরা দিনে পাঁচবার তার ঘরে যাই। তার কাছে নত হয়ে ইবাদতে মশগুল থাকি। দুনিয়াতে আমরা আমাদের ঘরগুলিকে সুন্দর করতে ব্যস্ত। অথচ আল্লাহর ঘরকে সুন্দর করার দিকে মনযোগী হই না। আল্লাহপ্রেম ও আল্লাহর প্রতি বান্দার ভালোবাসা থাকতে হবে বেহিসেবি। সেই মহব্বত ও ভালোবাসা থেকেই আল্লাহর ঘর নির্মাণের উদ্যোগ আল্লাহ আমার মাধ্যমে শুরু করিয়েছেন। এর পেছনে অগণিত মুসলমান ধর্মপ্রাণ মানুষের শ্রম ও ঘাম রয়েছে।