কূটনৈতিক সুবিধার অপব্যবহার করায় জাগুয়ার গাড়ি জব্দ
সুজন কৈরী : রাজধানীর পিংকসিটির একটি বাড়ি থেকে কূটনৈতিক সুবিধার অপব্যবহারের দায়ে জাগুয়ার গাড়ি জব্দ করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। গতকাল সকালে পিংকসিটির জেনো ভ্যালি নামক গ্যারেজ থেকে গাড়িটি জব্দ করা হয়।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মঈনুল খান বলেন, জব্দ গাড়িটি কূটনৈতিক সুবিধায় আমদানি করে পরবর্তীতে তা অবৈধভাবে হস্তান্তর করা হয়। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ৩০ ডিসেম্বর শুল্ক ঘোয়েন্দার সহকারী পরিচালক ইমাম গাজ্জালীর নেতৃত্বে একটি দল ঐ গ্যারেজে তল্লাশি চালিয়ে জাগুয়ার ব্রান্ডের ওই গাড়িটি (ঢাকা মেট্টো ভ ১১-১৬২৫) গাড়িটি উদ্ধার করে। তদন্তের স্বার্থে ঐ বাড়ির বাসিন্দা বর্তমান ব্যবহারকারী তানিয়া রহমানের কাছ থেকে ওই সময় গাড়িটি সাময়িকভাবে আটক করে শুল্ক গোয়েন্দার সদর দফতরে আনা হয়েছিল। পরে দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর শুল্ক গোয়েন্দা বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে গাড়িটি জব্দ করে। তিনি জানান, জব্দ গাড়িটি কার (সেলুন) জাগুয়ার-২০০২, চেসিস নম্বর সাজাকো ১১৭১এফএম২২৮৫, ইঞ্জিন নম্বর এমআইজেড-১৩৮৯২২৩৬৩ ও রেজি নম্বর ঢাকা মেট্রো ভ-১১-১৬২৫। ২০০২ সালে গাড়িটি তৈরি। গাড়িটির শুল্কায়নযোগ্য মূল্য ১৫ লাখ ৮৫ হাজার ৪২১ টাকা ৪৮পয়সা এবং শুল্ককরাদির পরিমাণ ২৩ লাখ ৮২ হাজার ৮৮৮ টাকা ৪৭ পয়সা।
শুল্ক কর্মকর্তা মঈনুল খান আরও বলেন, প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা অনুযায়ী, আমদানির সময় দাখিলকৃত বিল অব এন্ট্রি (বি/ই) অনুযায়ী গাড়িটির কান্ট্রি অব অরিজিন দেখানো হয়েছে জার্মানী। কিন্তু রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট অনুযায়ী কান্ট্রি অব অরিজিন চায়না। অন্যান্য সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী যুক্তরাজ্য। আমদানি দলিলের ইনভয়েসে এলসি নম্বর উল্লেখ আছে ০৪৪০২০১০১০৩, তারিখ: ০৪/০৬/২০০২। কিন্তু বিল অব লেডিং (বিএল) অনুযায়ী এলসি নং-০৭৪৪০২০১০১০৩। আবার বি/ই-তে এই নম্বর আছে ১৭৪৪০২০১০১০৩। এলসি ও এলসিএ ওপেনিং ব্যাংকের তথ্যাদিতেও ব্যাপক গরমিল পাওয়া গেছে। এতে প্রমাণিত হয় যে, উক্ত গাড়িটি অস্পষ্ট ও মিথ্যা দলিলাদি উপস্থাপন করে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে গাড়িটিক প্রকৃত মালিক তানিয়া রহমানের স্বামী মৃত মাহবুবুর রহমান বংলাদেশস্থ চেক রিপাবলিকের কনস্যুলার অফিসে কর্মরত ছিলেন। গাড়িটি কূটনৈতিক সুবিধায় আনা হয়েছিল এবং তা অবৈধভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় শুল্ক আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। সম্পাদনা: এনামুল হক