প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ওয়েব সাইট প্রধানমন্ত্রীর জীবনবৃত্তান্ত আপডেট হয়নি সোয়া এক বছরেও
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী : প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ওয়েব সাইটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জীবনবৃত্তান্ত আপডেট হয়নি সোয়া এক বছরেও। ২০১৫ সালের ৯ ডিসেম্বরের পর আর তার জীববৃত্তান্তে নতুন কোন তথ্য সংযোজন করা হয়নি। তা নাহলেও আবার ওই ওয়েবসাইটের শেষ হাল নাগাদের বিষয়ে সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে সাইটটি শেষ হাল-নাগাদ করা হয়েছে ২০১৭-০৩-০২, ০১:১৯:১৪। ওই সাইটের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে নাম লেখা রয়েছে: মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি ও বেসিস। ওই সাইটের কারিগরী সহায়তায় রয়েছে এটুআই। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর জীবন বৃত্তান্তর ওখানে বলা হয়েছে সর্বশেষ হাল-নাগাদ ৯ ডিসেম্বর ২০১৫। আবার রাষ্ট্রীয়ভাবে অফিসিয়াল ছবি হিসাবে প্রধানমন্ত্রীর যে ছবিটি ব্যবহার করা সেই ছবিটিও ব্যবহার করা হয়নি।
এই সরকার ডিজিটাল সরকার। বাংলাদেশের ডিজিটাল সরকারের জনক তিনি। অথচ তার সাইটেও তারও তথ্য আপডেট করা হয়না নিয়মিত। এছাড়াও একজন প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে বহিবিশ্বের কোন দেশ যদি কিংবা প্রধানমন্ত্রী কোন দেশে সফরের আগে যদি কোন দেশের সরকারের তরফ থেকে তার জীবনবৃত্তান্ত সংগ্রহ করা হয় প্রধানমন্ত্রীর অফিসের জীবন বৃত্তান্ত থেকে। সেখানে তারাও ২০১৫ সালের ৯ ডিসেম্বরের পরে কিছু পাবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে তার দল সংখ্যা ঘরিষ্টতা লাভ করার পর তিনি যে দায়িত্ব নেন তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন। সেটা উল্লেখ করা হয়েছে। এরপরের কোন অর্জনের কথা আপডেট করা হয়নি। শেখ হাসিনার বিভিন্ন সময় গৃহবন্দী হন এই কথা উল্লেখ করা হলেও ওয়ান ইলেভেনের সরকারের সময়ে তাকে কারাবন্দী অবস্থায় বিদেশে পাঠানো হয়, বিদেশ থেকে দেশে ফেরত আসতে দেওয়া হয়নি এবং তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা হয় ও ওই সব মামলায় তিনি পরবর্তীতে উচ্চ আদালত থেকে অব্যাহতি পান সেই সময়ের কোন কথা লেখা হয়নি।
তার নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে চীনের সঙ্গে ও জাপানের সঙ্গে অনেকগুলো চুক্তি হয়েছে। অর্থসহায়তার আশ্বাস পাওয়া গেছে। উল্লেখযোগ্য সাফল্য আছে এর কোন কিছুই লেখা নেই। তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় তথ্য প্রযুক্তি বিশারদ হিসাবে উল্লেখ করা হলেও তিনি যে প্রধানমন্ত্রীর আইটি বিষয়ক উপদেষ্টা তাও লেখা হয়নি। তার সরকারের আমলে জিডিপি বৃদ্ধি পেয়ে ৭.২ হয়েছে তাও বলা হয়নি। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন ও বিচার কাজ চলার বিষয়টি বলা হলেও এরমধ্যে যেসব আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের যাদের বিচার হয়েছে, রায় হয়েছে, রায় কার্যকর হয়েছে এগুলোও লেখা হয়নি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ নির্মমভাবে হত্যা করা হয় লেখা হলেও কতজনকে হত্যা করা হয়েছে তা উল্লেখ করা হয়নি।
শেখ হাসিনার সরকারের আমলে পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের তরফ থেকে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ, ওই অভিযোগের পর দেশে ও কানাডার আদালাতে অভিযোগ মিথ্যে প্রমাণ হওয়ার বিষয়ে কোন কথা উল্লেখ নেই। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু তৈরি করাচ্ছেন এরও কোন তথ্য নেই। অথচ উন্নয়ন কর্মকান্ডের ওখানে ২০১৪ সাল পর্যন্ত অনেক তথ্য রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের রিজার্ভের পরিমাণ ৩২.১০ বিলিয়ন ডলার হলেও তাও উল্লেখ করা হয়নি। পুরনো তথ্য রয়েছে সেখানে বলা আছে, ২৫ বিলিয়ন ডলারের উপর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। বিভিন্ন ক্ষেত্রে ২০১৫ সালের পরের কোন আপডেট তথ্য নেই। গত সোয়া একবছরে তার শাসনামলের অনেক অর্জন থাকলেও তা রেখা হয়নি। এমনকি তার সবশেষ রচিত গ্রন্থটির কথাও বলা নেই। এমন অনেক তথ্য নেই। আবার বাংলা জীবন বৃত্তান্তে কিছু বানানও ভুল লেখা হয়েছে।