লাহোরে সিন্ধু নদী কমিশনের বৈঠক যোগ দেবে ভারত
ইমরুল শাহেদ: চলতি মাসে পাকিস্তানের লাহোরে অনুষ্ঠিত সিন্ধু নদী স্থায়ী কমিশনের বৈঠকে ভারত উপস্থিত থাকবে বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের জিও টিভি। প্রায় দুই মাসের কূটনৈতিক তৎপরতার প্রেক্ষিতে এটা সম্ভব হয়েছে বলে জানা গেছে। এক্ষেত্রে বিশ্ব ব্যাংক মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করেছে। সিন্ধু নদের পানিচুক্তির শর্তাবলী কার্যকর করার জন্য পাকিস্তান ও ভারতকে কমিশন থেকে এই সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। সিন্ধু নদের পানি দুটি দেশের স্বাধীনতার পর থেকেই দুদেশের কাছে প্রধান উৎস হিসেবে কাজ করছে। এই পানি ব্যবহারে যাতে কোনো ব্যাঘাত সৃষ্টি না হয় সেজন্য বিশ্ব ব্যাংকের মধ্যস্থতায় ১৯৬০ সালে আইডব্লিউটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কিন্তু দুই দেশের মধ্যে বিরাজমান শত্রুভাবাপন্ন পরিস্থিতিতেও গত পাঁচ দশক থেকে এই চুক্তি সচল আছে। এই চুক্তির মাধ্যমেই রবি, সুটলেজ, বিয়াস, সিন্ধু, চেনাব ও ঝিলম নদীর পানি ভাগাভাগি হয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ভারত অধিকৃত কাশ্মীর নিয়ে সমস্যা দেখা দেওয়ায় নদীর পানি বন্টন ইস্যুটি আবার আলোচনায় চলে আসে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্প্রতি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘রক্ত এবং পানি একসঙ্গে প্রবাহিত হতে পারে না।’ এই কথার পরই চুক্তি নিয়ে নতুনভাবে বিতর্ক তৈরি হয়। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধুর পানি চুক্তির বিষয় পর্যালোচনায় আনার প্রশ্নটি সামনে নিয়ে আসেন এবং পাকিস্তানের সঙ্গে এই চুক্তিটি বাতিল করে দেন। এর পরও এই সমস্যা সমাধানের জন্য পথ খোঁজা হচ্ছে। এই পানির উৎপত্তি স্থান ভারত এবং নিয়ন্ত্রণ হয় পাকিস্তানে।
যাহোক বিশ্বব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ক্রিস্টালিনা গিওরগিয়েভার নয়াদিল্লি সফরের পরই ভারত-লাহোর বৈঠকে যোগ দেওয়ার সম্মতি ব্যক্ত করে। নয়াদিল্লি সফরকালে ভারতের অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ক্রিস্টালিনা। জানুয়ারি মাসে পাকিস্তান সফরকালে প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের সঙ্গে সাক্ষাতের কয়েক সপ্তাহ পরই দিল্লি সফরে যান তিনি।
গত সেপ্টেম্বরে উরির সেনাঘাঁটিতে দুঃসাহসিক সন্ত্রাসী হামলাকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছিল ভারত। এ প্রেক্ষাপটে লাহোরের পানি আলোচনায় ভারতের অংশ গ্রহণে সম্মত হওয়াকে দিল্লির কর্মকর্তারা ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। সূত্র : জিও টিভি