পালমিরা পুরোপুরি উদ্ধার করেছে সিরিয়া সরকার
এম রবিউল্লাহ: ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য সিরিয়ার প্রাচীন শহর পালমিরা পুরোপুরি উদ্ধার করেছে সিরিয়া সরকার। রাশিয়া সমর্থিত সিরিয়ার সরকারি বাহিনী আইএসের জঙ্গিদের কাছ থেকে পালমিরা উদ্ধার করে নেয়। আইএস বিতাড়নের পর সিরিয় সৈন্যরা ওই শহরে প্রবেশ করে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেয়। ২০১৫ সালে আইএস প্রথমবার পালমিরা দখল করেছিল। ২০১৬ সালের মার্চে সিরিয়ার সেনাবাহিনী আইএসকে হটিয়ে শহরটি পুনরুদ্ধার করেছিল তবে একই বছরের ডিসেম্বরে আলেপ্পো অভিযানে সিরিয়া সেনাবাহিনীর ব্যস্ততার সুযোগে আইএস ফের পালমিরা দখল করে নেয়। দখল নেওয়ার পরে দুইবারই পালমিরা প্রাচীন পুরাকীর্তি ও বিখ্যাত মূর্তি ভেঙে ফেলে। তারা শহরটিকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে। এই ধ্বংসযজ্ঞকে যুদ্ধাপরাধ অভিহিত করে এর নিন্দা জানায় জাতিসংঘ।
এদিকে জাতিসংঘে নিযুক্ত সিরিয়ার রাষ্ট্রদূত বাশার আল জাফরির বরাত দিয়ে শুক্রবার বিবিসি পালমিরা পুনর্দখলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সন্ত্রাসীগোষ্ঠী আইএসের হাত থেকে পালমিরা এখন সম্পূর্ণ মুক্ত। এই শহর থেকে জঙ্গিদের তাড়াতে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ তার কথা রেখেছেন বলে জানান জাফরি। বুধবার জঙ্গিদের সঙ্গে লড়াই করতে করতে সরকারি বাহিনী পালমিরায় প্রবেশের পথ করে নেয় বলে জানিয়েছে লন্ডনভিত্তিক পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস।
পালমিরা শহরের পত্তন কবে হয়েছিল, তার নিশ্চিত সঠিক সময় কারও জানা নেই। তবে খ্রিস্টপূর্ব প্রথম শতক থেকে পরবর্তী ৪০০ বছর এ মরূদ্যান শহরটি উন্নতির শিখরে পৌঁছেছিল বলে ঐতিহাসিকেরা মনে করেন। মসলা, সুগন্ধি, রেশম ও হাতির দাঁতের শিল্পের ওপর ভিত্তি করে এক সম্পদশালী শহরে পরিণত হয় পালমিরা। ‘মরুর মুক্তা’ নামে পরিচিত এ শহরে আছে দুই হাজার বছরেরও বেশি সময়ের পুরনো মন্দির, কারুকার্যম-িত স্তম্ভসহ নানা নিদর্শন। জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেস্কো ১৯৮০ সালে পালমিরাকে বিশ্ব ঐতিহ্য ঘোষণা করে। ২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে প্রতিবছর গড়ে দেড় লাখ পর্যটক পালমিরা ভ্রমণ করতেন। বিবিসি ও সিএনএন।