প্রসঙ্গ পরিবহন ধর্মঘট দুই মন্ত্রীকে হুকুমের আসামি করে মামলার দাবি বিএনপির
শাহানুজ্জামান টিটু: আদালতের রায়ে সম্প্রতি দুই গাড়ি চালকের সাজার ঘটনায় পরিবহন শ্রমিক সংগঠনগুলো হঠ্যাৎ করে সারাদেশে ধর্মঘট ডাকে। ফলে সারাদেশের মানুষ চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়ে। কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই সারাদেশে পরিবহন ধর্মঘট ডাকার কারণে সরকারের দুই মন্ত্রীও সমালোচনার মুখে পড়েন। ক্ষমতাসীন দলের কোনো কোনো নেতা এই ধর্মঘটের সমালোচনা করেছেন।
সরকারের দুই মন্ত্রীর প্রত্যক্ষ মদতে এই ধর্মঘট বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে এই পরিবহন ধর্মঘট করাকে সরাসরি সংবিধানের পরিপন্থী বলেও অভিহিত করেছে দেশের বিশিষ্টজন ও আইনজ্ঞরা। সরকারের দুই মন্ত্রীকে হুকুমের আসামি করে মামলা করারও দাবি জানিয়েছেন তারা। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, পরিবহন ধর্মঘটের ফলে মানুষের জীবনে যে অস্থিরতা ও দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে তার জন্য সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রীরা জড়িত। এই দায় তাদেরকেই নিতে হবে। তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি।
সরকারের দুইমন্ত্রী শাজাহান খান ও মশিউর রহমান রাঙ্গাকে হুকুমের আসামি করে মামলা করার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমদ আযম খান। তিনি বলেন, সরকারের দুই মন্ত্রী যেভাবে উস্কানি দিয়ে ৩৯ ঘণ্টা পরিবহন ধর্মঘট করিয়েছেন এটা শুধু অনৈতিক না এটা বরং অন্যায়। এবং এই ঘটনায় শ্রমিকের জীবন গেল আর হাজার হাজার মানুষের দুর্ভোগ হলো এর ক্ষতিপূরণ কে দেবে বা এর দায়-দায়িত্ব কে নেবে? এর দায়-দায়িত্ব তো শাজাহান খান ও মশিউর রহমান রাঙ্গাকে নিতে হবে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, তাছাড়াও আদালতের আদেশ বা আদালতের রায় তার বিরুদ্ধে সরকারের মন্ত্রী হয়ে উস্কানি দিয়ে এভাবে ধর্মঘটে যাওয়া এটা অত্যন্ত অন্যায় ও অপরাধ বলে আমি মনে করি। মামলা যেটা হয়েছে, সেই মামলায় কোনো শ্রমিক নেতা আসামি না। শত শত আসামি করা হয়েছে তাদের সবাই বাস-ট্রাকের শ্রমিক। এখানে শ্রমিক নেতারাও আসামি না। তাহলে আমরা কোথায় আছি?
দুই মন্ত্রীকে হুুকুমের আসামি করার সর্মথন জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, অবশ্যই। কারণ এই নৈরাজ্যগুলোর অবসান হওয়া উচিত। মন্ত্রী হয়ে তারা এই নৈরাজ্য করতে পারে না।
হুকুমের আসামি করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা প্রসঙ্গ তুলে ধরে আহমদ আযম বলেন, ইতিপূর্বে ম্যাডামের বিরুদ্ধে হুকুমের আসামি করে মামলা করা হয়েছে। কিন্তু ওই মামলা পুরোপুরি অনৈতিক। কারণ সেখানে ম্যাডামতো কোনো উস্কানি দেননি। ম্যাডাম এখানে হুকুমের আসামি হতে পারেন না। কিন্তু তারা (মন্ত্রীরা) তো সরাসরি উস্কানি দিয়েছেন। সরকারের মন্ত্রী হয়ে এগুলো তারা করতে পারেন না। সরকারের মন্ত্রীদের কিছু শপথ থাকে। এই শপথও তারা ভঙ্গ করেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে নৈরাজ্য করা হয়েছে। অবশ্যই এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। যারা যারা এর সাথে সম্পৃক্ত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি।
বিএনপির সিনিয়র মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, পরিবহন শ্রমিকদের সারাদেশে ধর্মঘট ডাকার জন্য সরকারের দুই মন্ত্রী জড়িত। সুতরাং দুই মন্ত্রী তো অবশ্যই, এর সঙ্গে আর যারা জড়িত তাদেরকেও চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় কোর্টের প্রতি কারো আস্থা থাকবে না, সবাই আস্থা হারিয়ে ফেলবে। সম্পাদনা: নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী