শিশু শব্দটি যেন মেয়েদের জন্য প্রযোজ্য নয়
উম্মুল ওয়ারা সুইটি: আমার থেকে ৩ বছরের বড় হলেও আমার ভাইকে সবাই পোলাপান বলে তার অনেক অন্যায়কে প্রশ্রয় দিয়েছে। আর ৮ বছর বয়স থেকেই আমাকে শুনতে হয়েছে বড় হয়ে যাচ্ছো। এটা করো না। ওটা করো না। আর ভাইয়ের তখন ১১ বছর। ওকে পরিবারের সবাই আলাদা খাতির করেই যেত। ওর বই পুস্তক , কাপড়-চোপড় সব এলোমেলো করে রাখত। মা ভীষণ আহ্লাদ করে বলে ছেলেটা এত অগোছল। আর আমি বই একটু এলোমেলো করলেই মায়ের বকুনির শেষ থাকত না। আমি ছোটবেলায় এ নিয়ে ভীষণ মন খারাপ করতাম। ভাইয়া মাস্টার্স করে বিদেশ যাওয়ার আগ পর্যন্তই তাকে অনেক বেশি সহ্য করা হতো।
এভাবেই কথাগুলো বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিমানী বিশ্বাস। তিনি বলেন, আমি অনেক বান্ধবীদের সঙ্গে আলোচনা করতাম। সবারই পরিবারে একই অবস্থা। আমার বাবা সবসময়ই নারী শিক্ষা এবং মেয়েদের বিষয়ে ভীষণ উদার। কিন্তু তারপরও দেখেছি , ছেলেদের জন্য যেন শিশুকালটা বরাদ্দ করাই থাকে। আর মেয়েদের জন্য থাকে তিরস্কার। ভাইয়ার কারণে ছোটবেলায় আমাদের মারামারি হতো। ভাইয়া আমাকে মারলে আমি যদি একটু প্রতিবাদ করতাম, বাবা বলত মেয়েদের এত দুষ্টুমি করা ঠিক না।
আমি ভাবতাম মেয়ে শিশুরা বেশি দুষ্টুমি করলে কি হয়? ছেলেরা কেন বেশি দুষ্টুমি করবে? আর প্রশ্ন জাগত ছেলেদের এত গুরুত্ব কেন? তারপর যখন বড় হতে লাগলাম, তখন তো প্রায় প্রতিদিন স্কুলে আসতে যেতে মন খারাপ হতো। এখনো আমার মনে হয়, আমাদের দেশে মেয়েদের জন্য শিশুবেলা বলে কোনো শব্দ নেই। শিশু শব্দটি যেন ছেলেদের জন্যই প্রযোজ্য।