এস এম নূর মোহাম্মদ: প্রখ্যাত লেখকদের লেখা বাদ দিয়ে পাঠ্যপুস্তকে পরিবর্তন আনা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে গতকাল সোমবার বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের বেঞ্চ এই রুল জারি করেন। শিক্ষা সচিব ও জাতীয় পাঠ্যপুস্তক কারিকুলাম বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যানকে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। রিটকারী আইনজীবীরা জানান, হেফাজতে ইসলামের দাবির প্রেক্ষিতে প্রথম শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত বাংলা সাহিত্যে কিছু প্রখ্যাত লেখকদের লেখা বাদ দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে পঞ্চম শ্রেণির বাংলা বইয়ের গোলাম মোস্তফার ‘প্রার্থনা’, হুমায়ুন আজাদের ‘বই’, ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা চারুপাঠের এস ওয়াজেদ আলীর ‘রাঁচি ভ্রমণ’, সানাউল হকের কবিতা ‘সভা’, আনন্দ পাঠের সত্যেন সেনের গল্প ‘লাল গরুটা’, একই বই থেকে শরৎচন্দ্রের গল্প ‘লারু’ ও উপেন্দ্র কিশোর রায় চৌধুরীর ‘রামায়ণ কাহিনী’ বাদ দেওয়া হয়েছে। সেখানে যুক্ত করা হয়েছে অন্য লেখকদের লেখা।
পাঠ্যপুস্তকে এই পরিবর্তন আনয়নের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত সপ্তাহে পাঠ্যপুস্তক কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ মমতাজ জাহান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন রিট আবেদনটি দায়ের করেন। আবেদনে বলা হয়, হেফাজতে ইসলামের সুপারিশক্রমে পাঠ্যপুস্তকে কিছু নতুন লেখা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং কিছু বিখ্যাত লেখকের লেখা বাদ দেওয়া হয়েছে। অথচ নতুনভাবে অন্তর্ভুক্ত লেখার অধিকাংশই ধর্মশিক্ষা বইতে রয়েছে।
গতকাল আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ। সঙ্গে ছিলেন সৈয়দ মামুন মাহবুব। পরে মামুন মাহবুব বলেন, সুপরিচিত, প্রথিতযশা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারীদের লেখা বাদ দেওয়া হয়েছে। যেমন এখানে গোলাম মোস্তফা, হুমায়ন আজাদ, শরৎচন্দ্র, রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর লেখা বাদ দেওয়া হয়েছে। যখন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার দেশ চালাচ্ছে তখন এটা কিসের ষড়যন্ত্র। এ কারণে রিট দায়ের করা হয়েছে। সম্পাদনা: রাশিদ