কিরণ সেখ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন পুনরায় চালু বা শুরু হতে পারে। তবে এর আগে দেশের জন্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন জরুরি বলে মনে করেন ’৮০-এর দশকের তুখোড় ছাত্র নেতা রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। ডাকসু নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দুই যুগের অধিক সময় ধরে কেনো ডাকসু নির্বাচন হয়নি, সেটাও খতিয়ে দেখা উচিত।
গত শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০তম সমাবর্তনে অংশ নিয়ে ডাকসু নির্বাচনের জন্য তাগাদা দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। রাষ্ট্রপতির উদ্যোগের পর দুই যুগের বেশি সময় ধরে আটকে থাকা ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। এই আলোচনার অংশ হিসেবে ডাকসু নির্বাচন নিয়ে সাবেক ছাত্র নেতা ও বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সঙ্গে একান্ত আলাপে তিনি এসব কথা বলেন। সাবেক এই ছাত্র নেতা বলেন, গত ২৭ থেকে ২৮ বছর ধরে কেনো ডাকসু নির্বাচন হয়নি? তবে রাষ্ট্রপতি যেহেতু বলেছেন, ডাকসু নির্বাচন হওয়া উচিত। আমাদের কথা হচ্ছে, এটা এখন শুরু হতে পারে। তবে শুধু ডাকসু নির্বাচন নয়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ সকল নির্বাচন হওয়া উচিত। আর এই নির্বাচনগুলোর মধ্যে দিয়েই জাতীয় নেতৃত্ব বের হয়ে আসবে।
ঢাবি কেন্দ্রীয় সংসদ নির্বাচন হলে দেশের গণতন্ত্রের পথ চলা আরো বেশি শক্তিশালী হবে মনে করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব। বলেন, সর্বোপরি এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় বিষয় একটি, এটা হলো নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা সহায়ক সরকারেরÑ ‘এটা যে কোনো নামেই হতে পারে’ এর অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এটা হচ্ছে, বর্তমান একটি বড় জরুরি বিষয়।
রুহুল কবির রিজভীর কাছে প্রশ্ন ছিল, পাকিস্তানের অগণতান্ত্রিক সরকারের শাসনামলে এবং স্বাধীন বাংলাদেশে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং এইচ এম এরশাদের সামরিক শাসনামলে ডাকসু নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু ১৯৯০ সালে দেশে গণতান্ত্রিক যাত্রা শুরুর পর থেকে কোনো নির্বাচন হয়নি কেন? তিনি বলেন, ‘৯০’ সালে কোনো কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নির্বাচন হয়েছে। তবে আওয়ামী লীগ এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েটসহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নির্বাচন বন্ধ করে দেয়। সুতরাং এর জন্য আওয়ামী লীগ দায়ী। জাতীয় রাজনীতিতে আসার জন্য যে প্রক্রিয়া, সেটা কেন বন্ধ করা হলো। এর জন্য প্রকৃত জাতীয় নেতৃত্ব তৈরির পথে বাধা সৃষ্টি হয়েছে।
এক প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচন নিয়ে রাষ্ট্রপতি যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তার সঙ্গে আমরা দ্বিমত পোষণ করি না। কারণ রাজনীতিবিদ তৈরির প্লাল্টফর্ম হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দেশে জাতীয় গণতন্ত্রকে অবরুদ্ধ রেখে আংশিক গণতন্ত্র হলে সেটাও বিকাশ লাভ করবে না। কারণ বর্তমান গোটা জাতিই গণতন্ত্রের প্রক্রিয়ায় মধ্যে অবরুদ্ধ।
সর্বশেষ এইচ এম এরশাদের সামরিক শাসনামলেও ডাকসু নির্বাচন হয়েছে। একইভাবে হয়েছে, দেশের সবকটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচন। ১৯৯০ সালের পর কোনো ডাকসু নির্বাচন হয়নি। সম্পাদনা: রাশিদ